বইয়ের বিবরণ

আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

এই লেখকের আরও বই
এই বিষয়ে আরও বই
আলোচনা ও রেটিং
৫(১)
  • (১)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
আলোচনা/মন্তব্য লিখুন :

আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন

Md. Yaqub Ali

২১ Feb, ২০২৩ - ৬:৫৮ AM

বঙ্গবন্ধু এই বইয়ে লিখেছেন - 'আমি লেখক নই, আমার ভাষা নাই, তাই সৌন্দর্যটা অনুভব করতে পারছি, কিন্তু গোছাইয়া লিখতে পারি না। পাঠকবৃন্দ আমায় ক্ষমা করবেন।' এটা শুধুই বঙ্গবন্ধুর বিনয় কারণ এই বই শেষ করে আপনি অবাক বনে যাবেন বঙ্গবন্ধুর প্রাঞ্জল বর্ণনা পড়ে। এখানে উপমার আধিক্য নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের শব্দমালা দিয়েই উনি এক একটা বাক্য তৈরি করেছেন ফলে প্রত্যেকটা বাক্যই হয়েছে সহজবোধ্য। এই ভ্রমণ কাহিনিতে ভাষার প্রথাগত কোন নিয়ম মানা হয়নি তাই পড়তে যেয়ে কখনওই একঘেয়ে লাগে না। বঙ্গবন্ধু বৃহৎ কোন কিছুর বর্ণনা থেকে শুরু করে একেবারে খুটিনাটি বিষয়ও সুক্ষ্ণভাবে তুলে ধরেছেন। তারমধ্য আছে ভ্রমণসঙ্গীদের সাথে খুনসুটি, নয়াচীনের শিশুদেরকে ভেঙচি কাটার মতো ব্যাপারও। নয়াচীনের মানুষের দেশপ্রেমও বঙ্গবন্ধুকে মুগ্ধ করেছিল। চীনের মানুষের দেশপ্রেম বিছিয়ে লিখেছেন - '১লা অক্টোবর নয়াচীনের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হবে।... চীনে এই দিনটাকে লিবারেশন ডে বলা হয়।... এই দিন সমস্ত চীনের লোক কাজকর্ম ছেড়ে আনন্দ করে। দিন দিন যে আনন্দ বেড়ে চলেছে এদের। এইদিন প্রত্যেকে তাদের কাজের হিসাব নেয় ও দেয়। দেশের জন্য কী করেছে এক বৎসরে কী কী ভালো কাজ করেছে। দেশ কতদূর অগ্রসর হয়েছে? রাস্তা কত হয়েছে? শিল্প কতগুলি বেড়েছে। কৃষক জমি পেয়ে কত বেশি ফসল উৎপাদন করেছে? এইদিনে তারা তার হিসাব করে। যার যা ভালো কাপড় আছে তা বের করে পরে। মাও ক দেখবে, তাঁদের বাণী শুনবে। মানুষ যেন পাগল হয়ে গেছে।' দেশকে ভালোবাসার এবং বিদেশের মাটিতে দেশের সম্মান রক্ষা করার বিষয়েও এই বইয়ে বঙ্গবন্ধু একটা ধারণা দিয়েছেন - 'আমরা হংকং থাকতে সভা করে নিয়েছিলাম, আমাদের দেশের ভিতরের খবর কেহ সভায় বলবো না এবং আলোচনা করবো না। আমাদের দেশের মুসলিম লীগের শাসনের কথা যদি বলি তবে দুনিয়া হাসবে। কারণ, মুসলিম লীগের গণতন্ত্রের যে রূপ তা কোনো সভ্য সমাজে না বললেই ভালো হয়। কারণ, তাতে পাকিস্তানের ইজ্জত যাবে।' বঙ্গবন্ধু গোছানো মানসিকতার একটা পরিচয় পাওয়া যায় এই বইয়ের শেষে ভ্রমণের নোটগুলো পড়ে। আসলে যেকোন লেখা শুরু করার আগে এভাবে নোট নিয়ে নিলে লেখাটা অনেক সহজ হয়ে যায় এবং কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেন বাদ না পড়ে সেটাও নিশ্চৎ করা যায়। যদিও এই বইয়ের শুরুতে বঙ্গবন্ধু বিযয়বশতঃ বলেছেন তিনি কোন লেখক নন কিন্তু এই বই পঠ করলে মনেহবে এটা কোন পেশাদার লেখকের ভ্রমণ কাহিনী। অনেকেই এই লেখাকে সৈয়দ মুজতবা আলীর ভ্রমণ কাহিনীর সাথে তুলনা করবেন বলেই আমার বিশ্বাস।