জল, জাল, জেলে—এই তিনে বোনা হয়েছে উপন্যাসের জমিন। তিতাসপারের জেলে সম্প্রদায়ের সমাজ-সংস্কৃতি আর জীবনযন্ত্রণা দিয়ে আঁকা উজ্জ্বল ক্যানভাস। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার এক জীবন্ত দলিল। বাংলা ভাষার এই ধ্রুপদি বয়ান দীর্ঘ সময়ব্যাপী আলোড়িত করছে পাঠকমন।
বইয়ের বিবরণ
তিতাসপারের জেলেরা নদীর মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে। রাত-দিন পরিশ্রম করেও তারা আর্থিক সচ্ছলতার হদিস পায় না। অভাব-অনটন তাদের যাপিত জীবনের নিত্যসঙ্গী। এসবের মধ্যেও কৌমসংস্কৃতির নানা বৈচিত্র্য তাদের জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে থাকে। এই দীনহীন জীবনেও আসে প্রেম-ভালোবাসা। সেখানেও নিরবচ্ছিন্ন সুখ মেলে না। প্রাকৃতিক নিয়মে একসময় নদীতে চর পড়ে। নদী তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ আর ঝাঁকধরা মাছ হারায়। নিরুপায় জেলেরা পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে জীবিকার অন্বেষণে অন্যত্র পাড়ি জমায়। তাদের দুঃখের সীমানা আরও দীর্ঘ হয়। এই নিম্নবর্গের মানুষদের জীবনসংগ্রামের এক অসামান্য আখ্যান তিতাস একটি নদীর নাম। দারিদ্র্যপীড়িত এই মানুষদের শ্রমজীবনের বাস্তবতা, জীবনযাপনের রীতিপদ্ধতি, প্রচল সামাজিক রীতিনীতিবহিভূর্ত আচরণ, নিজস্ব সংস্কৃতি এ উপন্যাসের উপজীব্য। উচ্চবর্গের শাসন-শোষণ এবং এর প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবাদ-প্রতিরোধের চিত্র গাঁথা রয়েছে গল্পের সুতোয়। বহু ভঙ্গিমা ও বৈচিত্র্যময় প্রাকৃত জীবনকে কাছ থেকে ছঁুয়ে-ছেনে দেখেছেন লেখক। তাই তাঁর বয়ানে ব্রাত্য মানবের যন্ত্রণা আর দীর্ঘশ্বাসের হৃদয়নিংড়ানো এ উপন্যাস পাঠকের মর্মমূল নাড়িয়ে দেয়।
- শিরোনাম তিতাস একটি নদীর নাম
- লেখক অদ্বৈত মল্লবর্মণ
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।