এ বইয়ের গদ্যরচনাগুলোতে শিল্প ও সংস্কৃতি নিয়ে কাইয়ুম চৌধুরীর যে সংবেদনশীল মনের দেখা মেলে, তা নানা কারণে মূল্যবান। তাঁকে বোঝার জন্য যেমন, বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটি যুগের যাত্রাপথ চিনে নেওয়ার জন্যও এসব লেখার কাছে আমাদের ফিরে ফিরে আসতে হবে। এসব লেখায় কাইয়ুম চৌধুরীর গদ্য কেবল অনুপম নয়, বিষয় ছাপিয়ে সে গদ্য পড়ারও একটা আলাদা আনন্দ আছে। এ গদ্যের স্বাদ আলাদা, যেখানে তিনি নিজের একটি স্বাতন্ত্রে্যর পরিচয় রেখেছেন।
বইয়ের বিবরণ
প্রকাশনার শুরু থেকে প্রথম আলো আর কাইয়ুম চৌধুরী ছিলেন অবিচ্ছেদ্য। প্রথম আলোর তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। প্রধান শিল্পনির্দেশক হিসেবে তাঁর হাতে প্রথম আলো এবং এর ক্রোড়পত্রগুলো দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। প্রথমা প্রকাশনের বইয়ের প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জার বিষয়ে তাঁর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিল শুরু থেকেই। নানা সময়ে নানা বিষয়ে তিনি লেখালেখি করেছেন প্রথম আলোতে। সে লেখাগুলোর একটি নির্বাচিত সংকলন এ বই। তাঁর শিক্ষক, প্রিয় শিল্পী, বন্ধু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, মেলা-উৎসব আর স্মৃতিচারণা—সব মিলিয়ে রচনাগুলোর মধ্যে ধরা পড়েছে কাইয়ুম চৌধুরীর একটা মানসচিত্র। প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা এই গদ্যরচনাগুলো একই সঙ্গে গত ৬৫ বছরের বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিবর্তনের একটি চিত্রও তুলে ধরছে।
- শিরোনাম জীবনে আমার যত আনন্দ
- লেখক কাইয়ুম চৌধুরী
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯১২০৪৪৫
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

কাইয়ুম চৌধুরী
কাইয়ুম চৌধুরীর জন্ম ৯ মার্চ ১৯৩২, ফেনী। স্কুলজীবনেই তাঁর মধ্যে আঁকাআঁকির ঝোঁক দেখা গিয়েছিল। ১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিক। সে বছরই ঢাকা আর্ট কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ডিগ্রি পান ১৯৫৪ সালে। আর্ট কলেজে তিনি শিক্ষক হিসেবে পান শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে। শিল্পীজীবনের শুরুতে একদল শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক আর গায়ক ছিলেন তাঁর সহযাত্রী। ক্রমান্বয়ে তিনি প্রতিষ্ঠিত হন বাংলাদেশের একজন প্রধান শিল্পী হিসেবে। শিল্পরচনার পাশাপাশি বইয়ের প্রচ্ছদ ও গ্রন্থসজ্জায় একজন পথিকৃতে পরিণত হন তিনি। নানা বিষয়ে তিনি গদ্য রচনা করেছেন, লিখেছেন কবিতা ও ছড়া। তাঁর ২৫টি ছড়া দিয়ে সাজানো তনুর সাথে রঙরেখাতে (২০১৩) বেরিয়েছে প্রথমা প্রকাশন থেকে। ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অল্প সময়ের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন।