কাছাকাছি পৌঁছে দেখলাম কাট আর ল্যান্স করপোরাল আলবার্ট ক্রপও আছে তার পাশে। খুশি হয়ে উঠল মন। পাশাপাশি দাঁড়ালাম তিনজন। কমান্ডার আমাদের কোম্পানির নাম বারবার উচ্চারণ করছে। ‘দুই নম্বর কোম্পানির আর কেউ?’ সাড়া নেই। একটু বিরতি দিয়ে আবার ডাকল, ‘দুই নম্বর কোম্পানির কেউ আছ?’ সাড়া নেই। কমান্ডার শান্ত, বলল, ‘দুই নম্বর কোম্পানির মাত্র এই কজন?’ কেউ কিছু বলছে না। অনেকক্ষণ পর আবার বলল কমান্ডার, ‘নম্বর।’ শরৎ ভোরের হিম বাতাস আমাদের হাড় পর্যন্ত যেন কাঁপিয়ে দিতে লাগল। ঠকঠক করছি, কোনোমতে যার যার নম্বর আউড়ে গেলাম আমরা। ডাক থামল বত্রিশের পর। অনেকক্ষণ কথা বলছি না কেউ। একসময় কমান্ডার বলে উঠল, ‘আর কেউ নেই?’ কে সাড়া দেবে! শিরশিরে অনুভূতি হলো শিরদাঁড়ায়। কেঁপে উঠল শরীর। গ্রীষ্মে আমরা যখন আসি, সংখ্যায় ছিলাম দেড় শ জন। এখন তা বত্রিশে নেমেছে!
বইয়ের বিবরণ
পল বোমার। কৈশোর পেরোনো এক তরুণ। মা, বাবা আর এক বোনকে নিয়ে ওদের সংসার। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলো। আরও অনেক তাজা তরুণের সঙ্গে পলকেও ফ্রন্টে যেতে হলো যুদ্ধ করতে।
ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টের দুই নম্বর কোম্পানিতে পল বোমারের সঙ্গে এসেছিল জোসেফ, কেমারিখ, ক্রপ, মুলার আর লিয়ার। ফ্রন্টে এসে ওরা দেখল যুদ্ধের আসল ভয়াবহতা। গুলি, বোমা, গ্রেনেড, বিষাক্ত গ্যাস। অজস্র মৃত্যু আর পঙ্গুত্ব। শিখল—হয় মারো, নয় মরো। ওরা জার্মান, যে ফরাসিকে কখনো চোখে দেখেনি, আজ তাকেই মারতে হচ্ছে; অচেনা ইংরেজ আর রাশান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে জার্মান সৈন্যদের বিরুদ্ধে। বন্ধুর মৃত্যু এই উপন্যাসের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা। কিন্তু এর বাইরে ছোট ছোট অনেক ঘটনা আছে, যেগুলো আনন্দের, দুঃখের, মজার, হাসির। পড়তে পড়তে পাঠক হাসবেন, আঁতকে উঠবেন এবং শেষ পর্যন্ত আরও একবার যুদ্ধবিরোধী হয়ে উঠবেন। এরিক মারিয়া রেমার্কের এই কালজয়ী যুদ্ধবিরোধী উপন্যাস বিশ্বের অনেক ভাষায় অনূদিত ও সমাদৃত হয়েছে। এ বইয়ের পাঠ যেকোনো পাঠকের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
- শিরোনাম অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট
- লেখক এরিক মারিয়া রেমার্ক
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯১২০৩২২
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

এরিক মারিয়া রেমার্ক
জন্ম ১৮৯৮ সালে, জার্মানিতে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। আহত হন। ওই যুদ্ধের অভিজ্ঞতায় লেখা উপন্যাস অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট তাঁকে বিপুল খ্যাতি এনে দেয়। জার্মানিতে হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসিরা ক্ষমতাসীন হলে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তবে পালিয়েও রেহাই পাননি। পুড়িয়ে ছাই করা হয় তাঁর বই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনায় তিনি পালিয়ে আশ্রয় নেন আমেরিকায়। লেখেন দ্য ব্ল্যাক অবিলিস্ক, ফ্লটসাম, আর্ক অব ট্রায়াম্ফ, দ্য নাইট ইন লিসবন। আরেক বিখ্যাত বই থ্রি কমরেডস। সুইজারল্যান্ডে তিনি মারা যান ১৯৭০-এ।