জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি

লেখক: মহিউদ্দিন আহমদ

বিষয়: রাজনীতি

৪৫০.০০ টাকা ২৫% ছাড় ৬০০.০০ টাকা

জাসদ একসময় বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঝড় তুলেছিল। ইতিহাসের এই ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ সময়ের অন্তরঙ্গ বর্ণনা পাওয়া যাবে মহিউদ্দিন আহমদের এ বইয়ে। এখানে আছে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী সময়ের উথালপাতাল রাজনীতির বিস্তার: পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ড, অভ্যুত্থান, পাল্টা-অভ্যুত্থান, জাসদের ভেঙে যাওয়া; আছে বিপ্লব, সন্ত্রাস ও স্বপ্নভঙ্গের কথা। এ বইয়ে ইতিহাসের একটি অজানা পর্ব প্রথমবারের মতো উন্মোচিত হলো । 

পছন্দের তালিকায় রাখুন

বইয়ের বিবরণ

সত্য গল্পের চেয়েও রোমাঞ্চকর—মার্ক টোয়েনের এই বিখ্যাত উক্তিটি বাংলাদেশের রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে খুবই প্রাসঙ্গিক। এই ভূখণ্ডের সাম্প্রতিক ইতিহাসের প্রধান মাইলফলক মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধ দেশের মানুষকে বদলে দিয়েছে আমূল, নড়বড়ে করে দিয়েছে এ অঞ্চলের সামাজিক বুনন ও রাজনীতির চালচিত্র। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা ও অর্থনৈতিক অবস্থা বদলে দিয়েছে রাজনীতির ব্যাকরণ। বলা চলে, একরকম শূন্যতার মধ্যেই জন্ম নিয়েছে প্রতিবাদের অন্য একধরনের প্রবণতা, যার সংগঠিত রূপ হচ্ছে জাসদ নামের একটি রাজনৈতিক দল। দলটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের উপজাত ফসল এবং একই সঙ্গে দ্রোহের চরমতম প্রতীক। এই বইয়ে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয়েছে দলটির উত্থান, বিস্তার ও ভেসে যাওয়ার কাহিনি, যা উপন্যাসকেও হার মানায়। সে কাহিনিতে স্বপ্ন আছে, রোমাঞ্চ আছে, আছে নাটকীয়তা ও বীরত্ব। সব মিলিয়ে বইটি হয়ে উঠেছে স্বাধীনতা-পরবর্তী অস্থির সময়ের এক দলিল, যার অনেকটাই লেখা হয়েছে রক্তের অক্ষরে। 

আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

মহিউদ্দিন আহমদ

জন্ম ১৯৫২, ঢাকায়। পড়াশোনা গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে। ১৯৭০ সালের ডাকসু নির্বাচনে মুহসীন হল ছাত্র সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বিএলএফের সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দৈনিক গণকণ্ঠ-এ কাজ করেছেন প্রতিবেদক ও সহকারী সম্পাদক হিসেবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সুংকোংহে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মাস্টার্স ইন এনজিও স্টাডিজ’ কোর্সের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও অধ্যাপক। তাঁর লেখা ও সম্পাদনায় দেশ ও বিদেশ থেকে বেরিয়েছে বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা অনেক বই। প্রথমা প্রকাশন থেকে বেরিয়েছে ‘অপারেশন ভারতীয় হাইকমিশন’, ‘প্রতিনায়ক’, ‘জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি’, ‘এক–এগারো’, ‘বাঙালির জাপান আবিষ্কার’, ‘বিএনপি: সময়-অসময়’, ‘বিএনপি : সময়-অসময়’, ‘আওয়ামী লীগ: উত্থানপর্ব ১৯৪৮-১৯৭০’, ‘এই দেশে একদিন যুদ্ধ হয়েছিল’, ‘আওয়ামী লীগ : যুদ্ধদিনের কথা ১৯৭১’। প্রথম আলোয় কলাম লেখেন।

এই লেখকের আরও বই
এই বিষয়ে আরও বই
আলোচনা ও রেটিং
৪.৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬৭(৩)
  • (২)
  • (১)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
আলোচনা/মন্তব্য লিখুন :

আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন

Faija Binte Haque

২৫ Feb, ২০২৩ - ১:২২ PM

বইয়ের নাম: জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি। লেখক: মহিউদ্দিন আহমদ। প্রকাশনী: প্রথমা প্রকাশন। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বামপন্থী রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সম্পর্কে ব্যক্তিগত আগ্রহ, একই সঙ্গে পারিপার্শ্বিক প্রভাব থেকে বইটি পড়া শুরু করেছিলাম। বইয়ে বর্ণিত ঘটনাপ্রবাহকে দুইটি অংশে ভাগ করলে একটা অংশে কেবল জাসদ দলটির গঠনের ইতিহাস, ভূমিকা, পটভূমি, উত্থান, বিস্তার, রূপান্তর, বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান, বিপ্লব, পুনরুত্থান, ভাঙন থেকে বর্তমান অবস্থা পর্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ, নির্ভরযোগ্য, প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে তথ্যনির্দেশ সংবলিত বর্ণনা রয়েছে। অন্য অংশে রয়েছে কেবল জাসদের ইতিহাসই নয়, বরং তৎকালীন অস্থির সময়ের সকল দলের সামগ্রিক ইতিহাস। জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাসদের বড় ভূমিকা ছিলো সেই স্বাধীনতার আগে থেকেই। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে জাসদের কিছু অনস্বীকার্য অবদানের কথা উল্লেখ করতে গেলে উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলির মধ্যে রয়েছেঃ 'বঙ্গবন্ধু' শব্দটির প্রথম ব্যবহার, 'জয় বাংলা' স্লোগানের প্রচলন, মানচিত্রখচিত পতাকা তৈরি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পতাকা উত্তোলন, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ। শুরু থেকেই জাসদ নিজেকে আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন রেখেছিলো। তাদের সামনে আইকন বা আদর্শ হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন সিমন বলিভার, সানডিনো ও ফিদেল কাস্ত্রো। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তাঁরা উদাহরণ দিতেন ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা ও সুভাষ বসুর। অন্য কমিউনিস্ট পার্টিগুলোর সঙ্গে তাঁদের আরেকটি প্রধান পার্থক্য ছিলো, জাসদ তাদের প্রচারপত্রে সর্বহারার আন্তর্জাতিকতার কথা মাঝেমধ্যে বললেও মূলত তারা ছিলো জাতীয়তাবাদী। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে কতিপয় কারণে দলটির আওয়ামী লীগের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি এবং অন্য বামদল-বিশেষত মাওবাদী সর্বহারা পার্টির সাথে মিলে বেশ তৎপর ছিলো দলটি। জাসদ রক্তপাতে নয়, বরং বিপ্লবে বিশ্বাসী হলেও তৎকালীন রক্ষীবাহিনীর সাথে বারবার সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রচুর লোক নিহত হয়। সেই অস্থির সময়ের অবস্থা হুমায়ূন আহমেদের ইতিহাসনির্ভর এবং শেষ উপন্যাস 'দেয়াল' বইয়ে বর্ণিত হয়েছে যেভাবে: "যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে ঠিকঠাক করে তুলতে সবাই সাহায্য করবে-এটাই আশা করা হয়, এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশে তখন অস্বাভাবিকের রাজত্ব। সব দল বর্ষার কই মাছের মতো উজিয়ে গেছে। মাঠে নেমেছে সর্বহারা দল। যেহেতু তারা সর্বহারা, তাদের আর কিছু হারাবার নেই৷ তারা নেমেছে শ্রেণীশত্রু ক্ষতমে। তাদের প্রধান শত্রু আওয়ামী লীগ। সর্বহারাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নেমেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল। তারা বাংলাদেশকে বদলে দেবে। বাংলাদেশ হবে সমাজতান্ত্রিক দেশ। বিশেষ ধরনের এই সমাজতন্ত্র কায়েম শ্রেণীশত্রু ক্ষতম দিয়ে শুরু করতে হয়। চলছে হত্যাকাণ্ড।" লেখকের মতে বাহাত্তর সালটা ছিলো জাসদের উত্থানপর্ব, তেহাত্তর-চুয়াত্তর ভরা যৌবন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই দলটি সংকটে পড়ে। কেননা পরিপ্রেক্ষিত পাল্টে যায় পুরোপুরি। ছিয়াত্তর থেকে শুরু হয় ভাটার টান। একদিকে অস্তিত্বের সংকট, অন্যদিকে ভাঙনপর্ব। এরপরও বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বল্প সময়ে দেশের রাজনীতিতে যে বিশাল পটপরিবর্তন হয়, সেই অস্থির সময়ে তৎকালীন ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বড় নিয়ন্ত্রক ছিলো জাসদ। বিশেষত খন্দকার মোশতাকের আশি দিনের শাসনাবসানের পর খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের মাত্র আড়াই দিনের মাথায় জাসদ নেতা কর্নেল তাহেরের একক নেতৃত্বে পুনরায় অভ্যুত্থান হলে কর্নেল খালেদ মোশাররফের পতন হয়। এরপর জিয়াউর রহমানের কৌশলে ক্ষমতাগ্রহণ, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য কঠোরতম নীতি অবলম্বন, কূটকৌশলের শিকার জাসদের কর্নেল তাহেরের ফাঁসি, জাসদ নেতাদের ওপর চাপানো মিথ্যা মামলা, অবিচারিক বিচার জাসদের দ্রুত ভাঙনকে তরান্বিত করে। বইটি না পড়লে জানতামই না বর্তমানে কোনো রকমে টিকে থাকা, অভ্যন্তরেও ভাঙনের শিকার দলটির অতীত এমন কল্পনাতীত গৌরবময়। বইটির বিশেষত্ব হলো, এখানে কেবল জাসদের গল্পই বলা হয়নি, বরং জাতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলির চমৎকার বিবরণী রয়েছে। একই সঙ্গে জাসদের দলীয় অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, বিপ্লবী চিন্তাধারা, কার্যক্রমেরও তথ্যনির্ভর বর্ণনা রয়েছে। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৯/১০ #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা

Md. Yaqub Ali

২১ Feb, ২০২৩ - ৭:০৫ AM

বইটার লেখনী খরস্রোতা নদীর মতো। একবার পড়তে শুরু করলে অবলীলায় এগিয়ে যায়। যদিও শেষটা আমার আপনার সকলের জানা। কিন্তু একসময় তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের বিষয়ে আমার বিশাল আগ্রহ ছিল। প্রদীপের আগুনে যেমন দলে দলে পোকারা এসে ঝাপ দেয় ঠিক তেমনি একসময় বাংলাদেশের অগণিত তরুণ এই দলে যোগ দিয়েছিল। এইসব বইয়ের পাঠ জরুরি। কারণ এখন সবকিছুই মেরুকরণের দোষে দুষ্ট। যে যার মতো করে ফায়দা হাসিল করে নিতে ব্যস্ত। সমাজের প্রত্যেকটা শ্রেণী পেশার মানুষ আজ এক একজন চাটুকার ছাড়া কিছুই না। জাসদের মতো দলগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অন্ততপক্ষে শিক্ষিত চোর সমাজের বাইরে যেয়ে খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন নিয়ে ভাবতো। হয়তোবা তারা সফল হয়নি কিন্তু এই স্বপ্নটা পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত মানুষকে আশাবাদী করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

MINHAJ MEHTAJ

২৪ Sep, ২০২২ - ১০:৫৩ AM

জাসদ সম্পর্কে অনেক ভাল এবং গোছানো তথ্য আছে এ বইয়ে।