যেসব ছাত্র জিয়াউর রহমানের সময়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বিচারপতি সাত্তারের আমলে বুয়েটে ভর্তি হয়ে হু মু এরশাদের আমলে ক্লাস শুরু করে, তাদের অনেকেই এরশাদের পতন হওয়া পর্যন্ত বুয়েট এলাকাতেই বসবাস করেছে। এই প্রেমকাহিনি সেই সময়কার। একদিকে স্বৈরাচারী প্রেমিকপুরুষ, কবি ও সৈনিক লে. জে. হু মু এরশাদের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চলছে, এরশাদ একের পর এক প্রেম করে চলেছেন, কবিতা লিখছেন, রাষ্ট্রধর্ম প্রবর্তন করছেন, অন্যদিকে যুবাবয়সী শিক্ষার্থীরা তাদের হৃদয় ও জীবন-জীবিকা-লেখাপড়াসংক্রান্ত দৈনন্দিন জটিলতার পাশাপাশি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নিঃস্বার্থভাবে সংগ্রাম করে চলেছে। এই উপন্যাস প্রেমের, এই উপন্যাস সংগ্রামের।
বইয়ের বিবরণ
শওকত রাজনীতি বোঝে না। সে গ্রামের ছেলে। অত্যন্ত মেধাবী। বুয়েটের পরীক্ষায় সে বেশ ভালো করে। পাস করে বুয়েটেরই শিক্ষক হবে। সেই শওকতেরও শরীরে ও মনে একটা ব্যথা আছে— অসাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতির দাবিতে ১৯৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে ছাত্ররা যখন আন্দোলন করছিল, তখন এরশাদ সরকারের পুলিশ তার পা ভেঙে দিয়েছে। মাকসুদার রাহমান কবি হতে চায়। তার কবিতার প্রেরণা আর্কিটেকচারের মেয়ে মৌটুসি। প্রেমের কবিতা লিখতে লিখতে সে-ও যুক্ত হয় এরশাদবিরোধী আন্দোলনে। ন্যাভাল আর্কিটেকচারের আবীর পত্রমিতালির সূত্র ধরে প্রেম করে শানুর সঙ্গে; হলের রুমেই একদিন আবীর আবিষ্কার করে শানুর পেটে সিজারিয়ানের দাগ। শহীদ হন রাউফুন বসুনিয়া। বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে বুকের রক্তে রাজপথে গণতন্ত্রের দাবি লেখেন নূর হোসেন। কবিতা ও কৃষ্ণচূড়া ভালোবাসতেন যে ডাক্তার মিলন, আড়াই বছরের মেয়ে শামাকে রেখে যান আন্দোলনে, আর ফিরে আসেন না। আলাদা আলাদা মানুষ, কিন্তু সবাই মিলেছে রাজপথে, ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে, স্বৈরাচারবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের দিনগুলোয়।
- শিরোনাম বিক্ষোভের দিনগুলিতে প্রেম
- লেখক আনিসুল হক
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯১২০১৪৮
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

আনিসুল হক
জন্ম ৪ মার্চ ১৯৬৫, নীলফামারী। শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে রংপুরে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনি, শিশুসাহিত্য—সাহিত্যের নানা শাখায় সক্রিয়। প্রথমা থেকে প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সে সময়ের মানুষদের নিয়ে তাঁর লেখা উপন্যাসের ছয়টি পর্ব—‘যারা ভোর এনেছিল’, ‘উষার দুয়ারে’, ‘আলো-আঁধারের যাত্রী’, ‘এই পথে আলো জ্বেলে’, ‘এখানে থেমো না’ ও ‘রক্তে আঁকা ভোর’। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার। তাঁর বই বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত ও প্রকাশিত হয়েছে দেশ-বিদেশে।