জামিল এক সকালে উঠে দেখতে পায়, সে নিজেকে দেখতে পাচ্ছে না। প্রতিদিনের বাস্তবতাকে সে দুঃস্বপ্ন থেকে পৃথক করতে পারছে না। তারপর ঘটে অবিশ্বাস্য, শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা। ব্যক্তিমনের ওপর বিভীষিকাময় বাস্তবতার তীব্র অভিঘাতের এই আখ্যান পড়তে শুরু করলে শেষ না করে থামা যায় না।
বইয়ের বিবরণ
লেখক-সাংবাদিক জামিল আহমেদ শেভ করতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখতে পায় আয়নায় নিজের ছবিটা ঝাপসা। কয়েক ঘণ্টা পরে সে দেখে, আয়নায় তার কোনো ছবিই আর ফুটছে না। তারপর ছাপার অক্ষরে নিজের নাম, অ্যালবামে নিজের ছবি—কিছুই সে দেখতে পায় না। এক সকালে ঘুম ভাঙলে জামিল দেখতে পায়, সে নিজেকে দেখতে পাচ্ছে না। অভিজ্ঞতাপূর্ব এক অদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় চল্লিশ বছর বয়সী চাকরিজীবী সাংবাদিক ও স্বপ্নজীবী গল্পলেখক জামিল আহমেদের জীবনে, যাকে প্রতিদিন ঘড়ি ধরে কাজে যেতে হয়, বাজার করতে হয়, ছোট ছোট দুই সন্তানকে সময় দিতে হয়, স্ত্রীর সঙ্গে ঘুমাতে হয়। আর দশজনের মতো তাকেও মুখোমুখি হতে হয় বাংলাদেশের সমসাময়িক বাস্তবতার, কিন্তু সেই বাস্তবতাকে দুঃস্বপ্ন থেকে পৃথক করতে পারে না সে। যেভাবে নাই হয়ে গেলাম বিভীষিকাময় বাস্তবতা ও ব্যক্তিমনের ওপর তার তীব্র ও গভীর অভিঘাতের এক অতিবাস্তব আখ্যান।
- শিরোনাম যেভাবে নাই হয়ে গেলাম
- লেখক মশিউল আলম
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯১৭৬৪১১
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
মশিউল আলম
জন্ম ১৯৬৬ সালে, জয়পুরহাটে। মস্কোর পাত্রিস লুমুম্বা গণমৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর দেশে ফিরে সাংবাদিকতা শুরু করেন। বর্তমানে প্রথম আলোয় কর্মরত। তাঁর লেখা উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তনুশ্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় রাত, ঘোড়ামাসুদ, জুবোফ্স্কি বুলভার, মাংসের কারবার, দ্বিতীয় খুনের কাহিনি।
আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন
Samiur Rashid Abir
১৫ Mar, ২০২৩ - ৪:০১ AM
একজন সাধারণ সাংবাদিকের বিজার ওয়ার্ল্ডের স্টোরি। বিয়ে কিংবা সংসারজীবনে অনাগ্রহী ব্যক্তিগণ বইটি চাইলে এড়িয়ে যেতে পারেন। কেননা, যে মায়ার সাথে মশিউল আলম পরিবারের খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন তা পাষাণ হৃদয়ে ফুল ফোঁটাতে বাধ্য। মশিউল আলম লেখক হিসাবে চমৎকার। দ্বিতীয় খুনের কাহিনী দিয়ে লেখকের সাথে ডেব্যু হয়। পরবর্তী বই হিসেবে বইটা পড়ে আমি যারপনাই মুগ্ধ। সমাজে অনেক সেক্টরেই বরাবরের মতন একটা অটোক্রেসি চলে আসছে। সেটিকে ইয়ুংকার উচ্চারণের মতন সাধারণ জিনিস নিয়ে লেখক যেভাবে তুলে ধরছেন- তা প্রশংসার দাবিদার। এ উপাখ্যান এক আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগা সাংবাদিকের কথা যে কিনা নিজেকে আয়নায় দেখে না কিংবা নিজের অস্তিত্ব আর খুঁজে পায় না। সমাজে এ ধরণের মনস্তত্ত্ব এর মানুষ বেড়ে যাচ্ছে দিন দিন। জামিল সাহেবের কন্যার মতন মানুষ প্রয়োজন এদের। তাহলে হয়ত অস্তিত্বহীনতা অনুভবের দুঃখ কিছুটা কমবে। লেখা হিসেবে অত্যন্ত সাহসী অ্যাপ্রোচ। এরূপ বই সচরাচর দেখা মেলে না। লেখকের মুন্সিয়ানায় বেশ ভাল একটা রাইড ছিল বইটার সাথে। #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা