রবীন্দ্রনাথ তাঁর পূর্ববঙ্গে বক্তৃতা বইটি প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন ১৯২৬ সালে পূর্ববঙ্গের কয়েকটি জেলায় বক্তৃতাদানের পরপর। বসুমতী সাহিত্য মন্দিরকে এর প্রকাশনার ভার দিয়েছিলেন। নিজে প্রুফ দেখেছিলেন। বক্তৃতাগুলো সম্পর্কে তাঁর দুর্বলতা ছিল। সংবাদপত্রে মুদ্রিত কয়েকটি ভাষণের অপূর্ণতা সংস্কার করে তিনি প্রবাসী, ভারতী, শান্তিনিকেতন, সবুজপত্র পত্রিকায় প্রকাশের জন্য নিজেই পাঠিয়েছিলেন। প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশকে তাঁর উদ্বেগ জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘তোমার হাতে বসুমতীর প্রুফ দিয়ে এসেছি। কিন্তু মন সুস্থির হয়নি।’ বইটি অবশ্য শেষ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। সেই বই-ই প্রথমা থেকে এবার বের হলো। এটিই রবীন্দ্রনাথের পরিকল্পিত কোনো বই, যার প্রথম প্রকাশ ঘটছে বাংলাদেশ থেকে।
বইয়ের বিবরণ
রবীন্দ্রনাথের জীবৎকালেই তাঁকে ঘিরে কতিপয় নিষ্ঠাবান গবেষক তথ্য-সংগ্রহ, যাচাই-বাছাই, বিন্যাস ও উপস্থাপনের উচ্চ আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাঙালির সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক-সামাজিক ইতিহাস তথা জীবনের বৃহত্তর অর্থময়তা অনুধাবনে এ ধরনের গবেষণা গুরুত্ববহ। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, পুলিনবিহারী সেন, কানাই সামন্ত প্রমুখের কাছে তাই বাঙালির কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। রবীন্দ্র-উত্তর যুগে প্রশান্তকুমার পাল সেই ধারায় অনন্য অধ্যায় যোগ করেছেন। বৃহত্তর পরিসরে এই গবেষণার পাশাপাশি রবীন্দ্রজীবনের নানা দিক নিয়ে আরও কেউ কেউ তাঁদের কাজের মাধ্যমে উপলব্ধির প্রসার ঘটিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তাৎপর্যময় সংযোজন ঘটালেন ভূঁইয়া ইকবাল তাঁর পূর্ববঙ্গে বক্তৃতা সংকলন-গ্রন্েথর মাধ্যমে। রাজশাহী, পাবনা, সিলেট, ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন সময়ে ও নানা উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথের প্রদত্ত ভাষণের নিছক সংকলন-গ্রন্থ এটি নয়, ভাষণের পাঠ সংগ্রহ ও সম্পাদনার সুবাদে অনেক অজানা তথ্যও পাঠকের কাছে মেলে ধরেছেন ভূঁইয়া ইকবাল। সেদিক থেকে বইটি হয়ে উঠেছে রবীন্দ্র-গবেষণার এক নতুন অধ্যায়। রবীন্দ্রনাথেরই বই বুঝি আত্মপ্রকাশ করল নতুন কলেবরে, নতুন কালে, নতুন গবেষকের প্রচেষ্টায়। এমন গ্রন্েথর তাৎপর্য তাই অশেষ।
- শিরোনাম পূর্ববঙ্গে বক্তৃতা ১৮৯২-১৯২৬
- লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯১২০৪৫২
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।