ওজারতির দুই বছর স্মৃতিকথার আঙ্গিকে লেখা এ দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ কালপর্বের ইতিহাস। এতে লেখক সরস ও স্বকীয় ভঙ্গিতে তাঁর পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ কালপর্ব সম্পর্কে জানার জন্য এটি একটি অপরিহার্য বই।
বইয়ের বিবরণ
আতাউর রহমান খান আমাদের দেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিক। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে মুসলিম লীগে যোগ দিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। কিন্তু আজীবন ছিলেন অসাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন ও উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। দেশ বিভাগের পর মুসলিম লীগ ছেড়ে আওয়ামী লীগ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ভাষা আন্দোলনেও অংশ নিয়েছিলেন। ছিলেন ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের ঐতিহাসিক বিজয়ের অন্যতম রূপকার। প্রথমে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ও পরে ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সরকারি এই দায়িত্ব পালনকালে তিনি ভেতর থেকে দেখেছিলেন পাকিস্তানি শাসকদের চেহারা। উপলব্ধি করেছিলেন বাঙালিদের প্রতি তাদের বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব। পূর্ব বাংলার ব্যাপারে পাকিস্তানি শাসকদের এই বৈষম্য-বঞ্চনার প্রেক্ষাপটেই বাঙালিদের মনে জন্ম নেয় স্বায়ত্তশাসনের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা, যা শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপ লাভ করে। জোট হিসেবে যুক্তফ্রন্টের দুর্বলতা, শরিকদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও নেতাদের সুবিধাবাদী আচরণও তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। ওজারতির দুই বছর গ্রন্েথ আতাউর রহমান খান অত্যন্ত সরস ভঙ্গিতে তাঁর সে মন্ত্রিত্বের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেছেন। যা হয়ে উঠেছে আমাদের ইতিহাসের এক মূল্যবান দলিল। আমাদের স্বাধীনতা-পূর্ব ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সঙ্গে পাঠককে পরিচিত করতে সাহাঘ্য করবে এ বই।
- শিরোনাম ওজারতির দুই বছর
- লেখক আতাউর রহমান খান
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯২৪০২১১
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

আতাউর রহমান খান
রাজনীতিক, আইনজ্ঞ ও লেখক। জন্ম ১৯০৭ সালের ১ জুলাই, ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলাধীন বালিয়া গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও বিএল ডিগ্রি লাভ করে ১৯৩৭ সালে আইন ব্যবসায় যোগ দেন। ১৯৪৪ সালে মুনসেফ পদ থেকে পদত্যাগ ও মুসলিম লীগে যোগদান। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন। ভাষা আন্দোলনেও অংশ নেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী এবং পরে ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ কোয়ালিশন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারির আগ পর্যন্ত ওই পদে বহাল ছিলেন। পরবর্তীকালে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: স্বৈরাচারের দশ বছর, অবরুদ্ধ নয় মাস ও প্রধানমন্ত্রিত্বের নয় মাস। মৃত্যু: ৭ ডিসেম্বর, ১৯৯১।