মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান জোরালো ভাষায় মাতৃভাষা ভালোভাবে শেখার পাশাপাশি, ‘এখনো দূরদেশি ভাষা থেকে বাতির আলো সংগ্রহ করা’র প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন। রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্রভাষার একক মর্যাদায় আসীন যে বাংলা, সেই মাতৃভাষা চর্চায় আমাদের অনীহা ও চরম অবহেলার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে এ বইয়ে। বস্ত্তত, নিজের ও পরভাষা নিয়ে আন্দোলিত হওয়ার, নতুন করে ভাবিত হওয়ার মতো বই ভাষার আপন পর, ভাষাপ্রেমী সবার জন্য যা অবশ্যপাঠ্য।
বইয়ের বিবরণ
এ বইয়ের লেখক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান একজন ভাষাসৈনিক। তাঁর ভাবনাজগতের বৃহৎ এক এলাকা জুড়ে থাকে ভাষাভাবনা, ভাষাপ্রেম। ভাষার আপন পর গ্রন্েথও এর পরিচয় মিলবে। তবে অন্য অনেকের মতো ভাষা বিষয়ে, সে তাঁর মাতৃভাষা বাংলা হোক বা বিশ্বের অন্য যেকোনো ভাষাই হোক, তাঁর একদেশদর্শী মনোভাব নেই। বরং বিশ্বের প্রতিটি ভাষা, সে ছোট বা বড়, এমনকি বিলুপ্ত হতে বসা আদি কোনো ভাষাই হোক, সে ব্যাপারে রয়েছে তাঁর অশেষ কৌতূহল। সেই কৌতূহলের বশবর্তী হয়েই তিনি এ গ্রন্েথর সাতটি প্রবন্ধে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন মাতৃভাষা বিষয়ে এমন সব প্রশ্ন, যা শুধু ভাবনারই সঙ্গী করে না, আমাদের শিক্ষা ও দৈনন্দিন জীবনচর্যায় তার আন্তরিক ব্যবহারে উদ্যোগী হতেও সমভাবে প্রাণিত করে। দেশ ও কালের চলমান প্রবাহ থেকেই শুধু নয়, আন্তর্জাতিক পরিসর থেকেও তিনি তুলে ধরেছেন মনীষীবৃন্দের মাতৃভাষা চর্চাবিষয়ক দৃষ্টান্তের পর দৃষ্টান্ত। ফলে এ বইয়ের পাঠ আমাদের সামনে উন্মুক্ত করে এমন এক ভাবনার জগৎকে, যার আন্দোলনে আমরা উদ্দীপিত হই প্রতিটি মুহূর্তে।
- শিরোনাম ভাষার আপন পর
- লেখক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯০১৯৩০৫
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
জন্ম ৩ ডিসেম্বর ১৯২৮, ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুরের দয়ারামপুর গ্রামে। ইতিহাসে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর। আইন বিষয়ে স্নাতক। ১৯৫৮ সালে আধুনিক ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক সম্মান (অক্সফোর্ড) এবং ১৯৫৯ সালে ব্যারিস্টার হন। অধ্যাপনা করেছেন রাজশাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৬৪ সালে আইন ব্যবসায় যোগ দেন। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হন। বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৬ সালে। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১০০। উল্লেখযোগ্য বই: যার যা ধর্ম: বাংলা ভাষায় প্রথম ধর্ম অভিধান ; যথাশব্দ ; কোরানসূত্র ; বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপঞ্জি ১৯৭১-২০১১ ; ভাষার আপন পর ; বাংলাদেশের নানান ভাষা ; নাগরিকদের জানা ভালো ; গঙ্গাঋদ্ধি থেকে বাংলাদেশ ; রবীন্দ্রবাক্যে আর্ট, সঙ্গীত ও সাহিত্য; তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ভার ইত্যাদি। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও একুশে পদক। ১১ জানুয়ারি ২০১৪ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।