অসমাপ্ত আত্মজীবনী শেখ মুজিবুর রহমান (PB)
লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান
বিষয়: জীবনী/আত্মকথা/স্মৃতিকথা, বঙ্গবন্ধু
বইয়ের বিবরণ
- শিরোনাম অসমাপ্ত আত্মজীবনী শেখ মুজিবুর রহমান (PB)
- লেখক শেখ মুজিবুর রহমান
- প্রকাশক দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড(ইউ পি এল)
- আইএসবিএন 9789845060592
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
প্যাকেজ: জীবনী
সুফিয়া খাতুন, আকবর আলি খান, সৈয়দ আব্দুল হাদী, আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, মতিউর রহমান, আসিফ নজরুল, কাজী আনোয়ার হোসেন, শেখ মুজিবুর রহমান
৩,১৭৭.৫০ টাকা ৩,৮৭৫.০০ টাকা
আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন
Ashraful Sharif
২০ Feb, ২০২৩ - ১:০৪ PM
বই: অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান বইয়ের ধরণ: আত্মজীবনী প্রকাশনী: দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড প্রচ্চদ: সমর মজুমদার পৃষ্ঠা: ৩২৯ 🔹জনমতের বিরুদ্ধে যেতে শোষকরাও ভয় পায় ৷ ~অসমাপ্ত আত্মজীবনী (পৃঃ ২১০) ◾অসমাপ্ত আত্মজীবনী: ১৯৬৭ সালে শেখ মুজিবুর রহমান আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন ৷ তবে শেষ করে যেতে পারেননি ৷ বঙ্গবন্ধুর লেখা আত্মজীবনী পাণ্ডুলিপিটি তার মেয়ে শেখ হাসিনার হস্তগত হলেতার ছোট বোন শেখ রেহানা পাণ্ডুলিপিটির নাম দেন— 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' ৷ যাতে বঙ্গবন্ধু তার ব্যক্তিজীবন ও বাংলাদেশের রাজনীতির হালচাল আলোচনা করেছেন ৷ ● প্রাককথন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" নিরেপেক্ষতার মৌলিক দলিল ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কখনো অন্যায়ের পক্ষে আপস করেন নাই ৷ জেল-জুলুম, নানান ভয়-ভীতি এমন কি ফাসির দঁড়িকেও ভয় করেন নাই ৷ দেশ, দেশের জনগণ এবং দেশের স্বার্থ রক্ষায় তিনি ছিলেন সর্বদায় অটুট ৷ বাবার আদর্শে গড়ে উঠা বঙ্গবন্ধু সর্বদায় মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন ৷ হয়েছেন অবিসংবাদিত নেতা৷ তার জীবনের সমস্ত কাজকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবেসেছে বাংলার মানুষ ৷ একাত্তরে তার ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ঝাপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে ৷ স্বাধীন হয় সোনার বাংলা ৷ জনগণকে সাথে নিয়ে সোনার বাংলাকে গড়ে তোলার কাজ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৷ ● লেখক পরিচিতি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৷ বাঙালি জাতির জনক ৷ রাজনৈতিক কবি ৷ জীবনের সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাঙালি জাতি এবং জাতি সত্তা নিয়ে কাজ করে গেছেন নিরলস ভাবে ৷ "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" বইয়ে তার জীবনের ঘটে যাওয়া (১৯২০থেকে ১৯৫৫) ঘটনাগুলো লিখেছেন অনেকের অনুরোধ এবং তার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছার উৎসাহে । কারাগারে থাকাকালীন তিনি আত্মজীবনী লিখা শুরু করেন (১৯৬৭) ৷ তবে আত্মজীবনী গ্রন্থের সমাপ্তি করে যেতে পারেননি ৷ ● বইয়ের বিষয়বস্তু: আত্মজীবনী মানে নিজের ঢোল নিজে পেটানো ৷ তবে শেখ মুজিবুর রহমানের "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" নিরপেক্ষতার দলীল ৷ ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধুর লেখা চারটি আত্মজীবনী মূলক খাতা তার কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয় ৷ যা ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে থাকাকালীন অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন ৷ কিন্তু শেষ করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীত প্রাণ ৷ সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন সমগ্র জীবন জুড়ে ৷ জেলে থাকাকালীন সময়ে সবার অনুরোধে বঙ্গবন্ধু চারটি ডায়রি লিখতে শুরু করেন ৷ যাতে তিনি আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট বর্ণণা করেছেন ৷ বইটিতে লেখক নিজের বংশ পরিচয়, শৈশব, স্কুল-কলেজের শিক্ষাজীবনের আলোচনা করেছেন ৷ পাশাপাশি বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক আলোচনা তুলে এনেছেন ৷ লেখক আলোচনা করেছেন- দেশভাগ, মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ ভাগের পর দেশের রাজনীতির হালচাল ৷ লেখক আরও আলোচনা করেছেন, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচিত সরকার গঠন নিয়ে ৷ বইটিতে লেখক লিখেছেন- ১৯৫৪ সালের নির্বাচন, পাকিস্তান সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ ৷ লেখক তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন ৷ বইটিতে আরও স্থান পেয়েছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা ও সন্তান-সন্ততির কথা ৷ লেখক নিজের স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছার সংগ্রামী জীবনের ত্যাগ তুলে এনেছেন৷ যিনি তার রাজনৈতিক জীবনে দুঃসময়ে সহায়ক ভূমিকায় ছিলেন ৷ বইটিতে লেখকের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের বর্ণণা ফুটে উঠেছে ৷ যা বইটিকে অনন্য করেছে৷ ●বইয়ের কিছু উক্তি: ◇ অন্ধ কুসংস্কার ও অলৌকিক বিশ্বাস বাঙালির দুঃখের আর একটি কারণ ৷ (পৃঃ ৪৮) ◇ নেতারা যদি নেতৃত্ব দিতে ভুল করে, জনগণকে তার খেসারত দিতে হয় ৷ (পৃঃ ৭৯) ◇ যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না ৷ (পৃঃ ৮০) ◇ শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকলে গণতন্ত্র চলতে পারে না ৷ (পৃঃ ১২৬) ◇ মানুষকে ভালোবাসলে মানুষও ভালোবাসে ৷ যদি সামান্য ত্যাগ স্বীকার করেন, তবে জনসাধারণ আপনার জন্য জীবন দিতেও পারে ৷ (পৃঃ ২৫৭) ● বইয়ের দারুণ একটি কথা: একদিন সকালে আমি আর রেণু বসে গল্প করছিলাম । হাচু আর কামাল নিচে খেলা খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে এসে আব্বা আব্বা বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে। একসময় কামাল হাচিনাকে বলছে "হাচু আপা, তোমার আব্বারে আমি আব্বা বলি"। আমি আর রেণু দুইজনে শুনলাম । আস্তে আস্তে বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে ওকে খুলে নিয়ে বললাম, আমি তো তোমারও আব্বা। কামাল আমার কাছে আসতে চাইতো না । আজ গলা জড়িয়ে ধরে পড়ে রইলো । বুঝতে পারলাম এখন আর ও সয্য করতে পারছে না। নিজের ছেলে অনেকদিন না দেখলে ভুলে যায়। "আমি যখন জেলে যাই তখন ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস ।" ● বইটি কেন পড়া উচিত: বাঙালি জাতি সত্তার ইতিহাস জানার জন্য বইটি অন্যতম ৷ বঙ্গবন্ধু যেহেতু বাংলার সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছেন সেজন্য তার আত্মজীবনী মানেই বাংলার ইতিহাস ৷ ঐতিহ্য ৷ "অসমাপ্ত আত্মজীবনী" পাঠ করলে পাঠক অবশ্যই বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য পুঙ্খানুপুঙ্খ জানতে পারবে ৷ বাংলার ইতিহাস জানার জন্য বইটি সবার পড়া উচিত ৷ যদিও বইটি তিনি শেষ করে যেতে পারেন নাই, তবুও এতে বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে সুদূঢ় আলোচনা করেছেন ৷ ● ব্যক্তিগত রেটিং: ৫/৫ #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা