যাঁদের কথা এই বইয়ে বর্ণিত হয়েছে, তাঁরা সবাই বাংলাদেশের প্রথিতযশা সাহিত্যিক, সমাজকর্মী এবং রাজনৈতিক ও নারী আন্দোলনের অগ্রপথিক। তাঁদের সময়টা ব্রিটিশ যুগ থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের বিভাগকাল, বিভাগ-উত্তর পূর্ব পাকিস্তান এবং সবশেষে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা-উত্তর কালের সংগ্রামমুখর সময়ের ইতিহাসকে লালন করেছে। লেখক মালেকা বেগম সেই যুগের শতসহস্র নারী-পুরুষের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় জানাতে সক্ষম হয়েছিলেন সচিত্র সন্ধানী পত্রিকার ‘শুভ্র সমুজ্জ্বল’, ‘অপর পক্ষ’ ও অন্যান্য বিভাগের লেখায়। তাঁর সেই প্রয়াস গাঁথা রইল শুভ্র সমুজ্জ্বল: জীবনসঙ্গীর আয়নায় ও অন্যান্য বইয়ে। বইটি বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-নারী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ের ইতিহাস হিসেবে বিবেচিত হবে।
বইয়ের বিবরণ
বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন সেরা কীর্তিমানের দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে এ বই। এঁদের সাফল্যের পেছনে রয়েছে স্ত্রীদের অকৃত্রিম ভূমিকা। কতটা অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের এবং কতটা অকৃত্রিম বন্ধু হয়ে সাফল্যের তরিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন নেপথ্যের নারীরা, সেসব তাঁদের জবানিতে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন লেখক-গবেষক-নারীনেত্রী মালেকা বেগম। ব্যতিক্রমও আছে একটি, কাজী মোতাহার হোসেন বলেছেন স্ত্রীর কথা, তাতেও বিবৃত হয়েছে তাঁর হয়ে ওঠার পেছনে স্ত্রীর অবদান।
দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে লেখকের নিজস্ব মূল্যায়ন। তৃতীয় পর্বের তিনটি নিবন্ধ লেখকের শিক্ষক, একাত্তরের কয়েকজন শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বলধা গার্ডেনের প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে।
কীর্তিমান ব্যক্তিদের দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে বা জীবনের অন্দরমহলকে বিবেচনায় নিয়ে জীবনকে মূল্যায়নের প্রয়াস খুব দুর্লভ। এ বইয়ে প্রধানত সেই কাজটিই করা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাস, রাজনীতি আর চিন্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের বেশ কয়েকজন কীর্তিমান সম্পর্কে পাঠক নতুনভাবে জানার সুযোগ পাবেন এ বইয়ে।
- শিরোনাম শুভ্র সমুজ্জ্বল : জীবনসঙ্গীর আয়নায় ও অন্যান্য
- লেখক মালেকা বেগম
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯১৭৬২৮২
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
মালেকা বেগম
জন্ম ১৯৪৪ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। পরে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন। পিএইচডি (২০০৪) করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন স্টাডিজ সেন্টার থেকে পোস্টডক্টরাল (২০১১)। ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। সত্তরের দশক থেকে নারী আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। মহীয়সী নারী কবি সুফিয়া কামালের সাহচর্যধন্য এই নারীনেত্রী মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় সংগঠক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার অ্যান্ড উইমেন স্টাডিজ বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক। বর্তমানে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও প্রধান। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৩৩।