নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে এই সফর শুরু। শেষটাও সেখানেই। কিন্তু এমন দুঃস্বপ্নে! উৎপল শুভ্র অনেকবার গেছেন নিউজিল্যান্ডে। দেশটির সৌন্দর্য তাঁর মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। যেদিকে তাকান, প্রকৃতির বিশালতা—সবুজ বনানী, সুদৃশ্য পাহাড় আর হ্রদগুলোতে অপার্থিব নীল জলরাশি। তিনি কল্পনাও করেননি, সেখানে এমন হত্যাযজ্ঞ হবে। কিন্তু হলো এবং এই ভ্রমণগল্প নিউজিল্যান্ডের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে আবদ্ধ থাকল না। যুক্ত হলো ক্রাইস্টচার্চের হত্যাকাণ্ড, বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলোয়াড়দের জন্য উদ্বেগ আর নিউজিল্যান্ডের স্বর্গ হইতে বিদায়ের বেদনা। এই বই সেই গল্পই!
বইয়ের বিবরণ
কী দুঃসহ একটা দিন! আর দশটা দিনের মতোই সকালে নিয়ম করে সূর্য উঠেছে, পাখি উড়েছে আকাশে। সৈকতে এসে ভেঙে পড়েছে তাসমান সাগরের ঢেউ। তারপরও সেটি কত আলাদা! দূষণহীন নির্মল বাতাসের কারণে নিউজিল্যান্ডের রোদে সব সময়ই মায়াবী এক সোনালি রং, কিন্তু সেদিন ওই রোদটা যেন অশ্রুভেজা। পাখির কিচিরমিচিরেও যেন মানুষের নিষ্ঠুরতা নিয়ে বিস্ময় আর প্রতিবাদ। সাগরের ঢেউ ভেঙে পড়ছে কান্নায়...
পৃথিবীর মধ্যে একটুকরো স্বর্গ বলে পরিচিত নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরে এলে মানুষের চোখেমুখে ঘোর লেগে থাকে। নিউজিল্যান্ডের সৌন্দর্যের গল্প শেষই হতে চায় না। বারবার দেখলে স্বর্গীয় সৌন্দর্যও মলিন হতে শুরু করে, এ কথা ভুল প্রমাণ করে দেবে নিউজিল্যান্ড। পাঁচবার সেই দেশ ভ্রমণ করেও ক্রীড়া লেখক উৎপল শুভ্রের ঘোর কাটেনি। কিন্তু কে জানত, সেই একটুকরো স্বর্গে হঠাৎ দেখা দেবে রক্তখেলায় মেতে ওঠা এক দানব! মন ছুঁয়ে যাওয়া এই ভ্রমণগল্পে শেষ পর্যন্ত অবশ্য অসুন্দরের বিরুদ্ধে সুন্দরের জয়গানই করেছেন লেখক।
- শিরোনাম নিউজিল্যান্ড : দুঃস্বপ্নের আগে ও পরে
- লেখক উৎপল শুভ্র
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৫২৫০৫৩৫
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
উৎপল শুভ্র
জন্ম ২৫ পৌষ ১৩৭৩, নেত্রকোনায় মামাবাড়িতে। পুরকৌশলে স্নাতক ক্রীড়া-সাংবাদিকতায় এসেছিলেন নিছকই শখে। সেই শখই পেশা হয়ে গেছে দুই যুগেরও বেশি। শুধু একটা জিনিস একদমই বদলায়নি। শুরুর সেই মুগ্ধতার চোখেই এখনো আবিষ্ট খেলার নেশায়। সাহিত্যের নিবিষ্ট পাঠক, লেখাতেও তার ছাপ খুঁজে পান পাঠকেরা। এক শ ছুঁইছুঁই টেস্ট ম্যাচ ছাড়াও কাভার করেছেন ক্রিকেট ও ফুটবল বিশ্বকাপ এবং অলিম্পিক গেমসের মতো বড় আসর। অসংখ্য লেখা প্রকাশিত হয়েছে বিদেশের নামী পত্রিকা ও ওয়েবসাইটে। প্রথম আলোর ক্রীড়া সম্পাদক পদে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ১৯৯৮ সাল থেকে ‘ক্রিকেটের বাইবেল’ বলে পরিচিত উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালম্যানাক-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি।
আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন
Md Mizan
২৮ Feb, ২০২৩ - ১১:২১ AM
বইটি পড়েছি 2022 সালের জানুয়ারি মাসে । বইটি পড়ে সত্যি অভিভূত হয়েছি। লেখক উৎপল শুভ্র ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট সিরিজ খেলায় গিয়েছিলেন সাংবাদিক হিসেবে। সেখানে গিয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন , এমনকি তার মাঝে মৃত্যুচিন্তা ঢুকেছিল। তিনি ত স্বপ্নে অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীকে দেখেছিলেন। তখন বিদেশ বিভুঁইয়ে মরার কথা ভেবে শঙ্কিত হন। তবুও অসুস্থতা ডিঙ্গিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় তিনি ঘোরাঘুরি করেছেন, প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে বলেছে, , কিছু মজার কাহিনী তুলে ধরেছেন । তাদের প্রাচীন ক্রিকেট মাঠগুলো আজও ক্রিকেটের ভালোবাসার প্রতীক হয়ে রয়েছে সে বিষয়টিও তুলে ধরেছেন ।বাংলাদেশি ভক্তদের উন্মাদনাও ছিল লক্ষণীয়। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের বরপুত্র বাট শার্ট কিলিফ যে কষ্ট ও চড়াই উতরাই পার করে ক্রিকেটকে তুলে ধরেছেন সেটিও দেখতে পাই। তবে খেলা চলাকালীন শুক্রবারের দিনে বাংলাদেশ দল জুম্মার নামাজ পড়তে মসজিদে্র দিকে ধাবিত হয়। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা যখন মসজিদে যাচ্ছিল তার আগেই মসজিদের ঘটে গেছে এক নির্মম, অবিশ্বাস্য জঙ্গী হামলা।সে হামলায় নিহত হয়েছিলেন অর্ধ শতাধিক মানুষ। বেদনাবিধুর স্মৃতি কি ভোলা যায়! লেখক সেই বিষয়টি বারবার উপস্থাপন করেছেন। তখন নিউজিল্যান্ড সিরিজ বাতিল করে বাংলাদেশ দল দেশে ফিরে আসে। তবে সেখানকার মানুষের বেদনা, যে দুঃখ তা দেখে লেখক একপ্রকার ভেঙে পড়েন। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার মত ভাষা তার কাছে ছিল না। বইটি প্রথমা প্রকাশন এর ওয়েবসাইট থেকে কিনে যখন নিয়ে এসে পড়তে শুরু করলাম তখন খুবই ইন্টারেস্টিং ভেবেছিলাম এবং শেষ না করে পারলাম না । বইটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। ধন্যবাদ।