বইয়ের বিবরণ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এ জাতিকে নেতৃত্বে দিয়েছেন। সে পরিকল্পনার চূড়ান্ত পরিণতিতে ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও তিন লক্ষ সর্বোস্ব খোয়ানো মা-বোনের বিনিময়ে জাতি পেয়েছে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ জন্য বঙ্গবন্ধুকে নানাভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত হতে হয়েছে। কারাগারে কাটাতে হয়েছে জীবনের সোনালি সময়। রাজনৈতিক জীবনের ৪ হাজার ৬৮২ দিন তিনি কাটিয়েছেন বিভিন্ন কারাগারে। এর মধ্যে স্কুলের ছাত্র অবস্থায় ব্রিটিশ আমলে সাত দিন কারা ভোগ করেন। বাকি ৪ হাজার ৬৭৫ দিন কারাভোগ করেন পাকিস্তান সরকারের আমলে। পূর্ব বাংলার অধিকার বঞ্চিত হতভাগা জনগোষ্ঠীর পক্ষে সোচ্চার হবার কারণে পাকিস্তানের সূচনা থেকেই তাঁকে শাসককুলের কোপানলে পড়তে হয়। অতঃপর তাঁকে পথচ্যুত করার জন্য একের পর এক দায়ের করা হয় মিথ্যা মামলা। এ সমস্ত মামলার ইতিবৃত্ত বিধৃত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থে। এছাড়া সেসময়কার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে মামলা বিষয়ক বিস্তারিত বিবরণ, তথ্য ও উপাত্ত। সেকেন্ডারি উৎস হিসেবে এসব গ্রন্থ ও পত্রিকা হতে সংগৃহীত হয়েছে এ গ্রন্থের বিষয়াদি। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সামান্য সংশোধনী ব্যতিরেকে বানানসহ গ্রন্থ ও পত্রিকার ভাষ্য অপরিবর্তনীয় রাখা হয়েছে। শুধু নামের ক্ষেত্রে কিছু সংশোধন করা হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে সেসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে। কোন পত্রিকা লিখেছে মুজিবর, কোন পত্রিকা লিখেছে মজিবর, কোন পত্রিকা লিখেছে মজিবুর। তাজউদ্দীন আহমদের ক্ষেত্রেও এহেন বিচ্যুতি অনুসৃত হয়েছে। কোনো কোনো পত্রিকায় লিখা হয়েছে তাজুদ্দিন। নতুন প্রজন্মের বোধগম্যতার প্রয়োজনে এহেন বিভ্রান্তি নিরোসনকল্পে বানানসমূহ সঠিকায়নের জন্য প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধন করা হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে স্কুল জীবনের একটি প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুকে এক মামলায় অভিযুক্ত হয়ে সাতদিন কারাবাস করতে হয়েছিল; পরবর্তী সময়ে সে ধরনের মামলা-সে ধরনের কারাবাস আর তাঁর পিছু ছাড়েনি। নানামুখী মামলার মাধ্যমে তাঁকে স্তব্ধ করার জন্য, তথা এ জাতিকে দাবিয়ে রাখার জন্য, পূর্ব বাংলাকে শোষণের উর্বরভূমি হিসেবে সংরক্ষিত রাখার জন্য; শাসককুলের প্রয়াস ছিল অব্যাহত। অধিকন্তু এ সমস্ত মামলার মাধ্যমে যেমন বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তি বিনষ্টকরণ এবং তাঁকে গণবিচ্ছিন্ন করার অপপ্রয়াস অব্যাহত ছিল, তেমনি অব্যাহত ছিল তাঁকে হত্যা করার অপচেষ্টা। শেষ পর্যন্ত এ সমস্ত মিথ্যা মামলার কোনোটিই বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক আমলযোগ্য হয়নি। সকল মামলাতেই বঙ্গবন্ধু বেকসুর খালাশ পান। তাঁর জনপ্রিয়তাতেও ভাটা পড়েনি। অধিকন্তু সততা, সাহসিকতা ও প্রজ্ঞাগুণে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির প্রেরণার প্রতীক। জাতিসত্তা গঠনের অনবদ্য সংগঠক। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ওই মিথ্যা মামলাগুলো আজ স্বাধীনতা আন্দোলন-সংগ্রামের অনবদ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃত। এছাড়া এ মামলাগুলো আজ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেও স্বীকৃত। সে নিরিখেই এ মামলাগুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে মামলা বিষয়ক ইতিবৃত্ত। আশা করি সদাশয় পাঠককুল এ গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম-বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের এই অবিচ্ছেদ্য বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভে সক্ষম হবেন। জ্ঞানত এখানে কোনো বিভ্রান্তিকর বা ভুল তথ্য উত্থাপন করা হয়নি। তদুপরি তেমন কিছু পরিদৃষ্ট হলে তার দায় একান্তভাবেই সম্পাদকের ওপরই বর্তাবে। এ বিষয়ক যে কোনো পরামর্শও বিনাপ্রশ্নে গ্রহণীয়। এ গ্রন্থের প্রচ্ছদ করেছেন প্রিয়জন ধ্রুব এষ, তাঁর প্রতি রইলো অশেষ কৃতজ্ঞতা। ছবিগুলো নেয়া হয়েছে ইন্টারনেট থেকে। গ্রন্থটি প্রকাশের সার্বিক দায়িত্ব নিয়ে হাওলাদার প্রকাশনীর মকসুদ হাওলাদার কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।
- শিরোনাম বঙ্গবন্ধু বিরোধী মিথ্যা মামলা
- লেখক মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক
- প্রকাশক হাওলাদার প্রকাশনী
- আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৯৬১০৫-১-৯
- প্রকাশের সাল ২০২৩
- মুদ্রণ 1st Published
- বাঁধাই হার্ডকভার
- পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৭৪
- দেশ বাংলাদেশ
- ভাষা বাংলা
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।