বইয়ের বিবরণ
দিব্যজ্ঞানী, মরমী কবি ও মহান সাধকসত্তা লালন মনের সূক্ষ্ম অভিব্যক্তি প্রকাশিত হয়েছে তার সংগীতের মাধ্যমে। তিনি তার ভাবসংগীতে সৃষ্টির মধ্যেই স্রষ্টার আদি রহস্য নানা রূপক প্রতীক শব্দের দ্বারা প্রকাশ করেছেন। এই মানব দেহই স্রষ্টার বাসস্থান । দেহস্থিত পরমাত্মা বা আত্মাকে লালন সংগীতে ‘মনেরমানুষ' নামে অভিহিত করা হয়েছে। মনােজগতেই স্রষ্টার আসল রহস্য। আত্মদর্শনকারী লালন পরমসত্তার চিরজাগ্রত রূপকে মানবগুরুর ভেতরেই অন্বেষণ করার তাগিদ দিয়েছেন তাঁর সংগীতে। কারণ স্রষ্টা চিরজাগ্রত মানবগুরুর ভেতরেই বাস করে জগতজুড়ে লীলারহস্যের খেলায় মেতে আছেন। আর সেই মানুষ হলেন সহজমানুষ, মনেরমানুষ, আলেকের মানুষ, অধরাদ, অচিন পাখী। দিব্যজ্ঞানী লালন তাকে ভজতেই নিবেদন করেছেন এভাবে,
এখানে যে মানুষকে লালন উচ্চাসন প্রদান করেছেন তা চেতনগুরু। এই চেতনগুরু তথা সদগুরুর ভেতরে পরমাত্মার মূর্তরূপের প্রকাশ। তাই অমূল্যনিধি যদি কেউ নগদে হাতে পেতে চায় তাকে সহজমানুষরূপে মুরশিদকেই ভজতে হবে। অন্য সংগীতে এই মানুষতত্ত্বের ভেতর পরমতত্ত্বের সন্ধান করেছেন লালন দিব্যজ্ঞানের আলােকে। সমস্ত ভেদরহস্যকে উপলব্ধি ও প্রকাশ করেছেন তত্ত্বজ্ঞানের স্বরূপ দর্শনের মাধ্যমে। যেমন,
দেহ-মনের খবর না জেনে স্রষ্টাকে খুঁজলে মৌলিক তত্ত্বকথা উদ্ধার করা যায় না। এই দেহেতেই তাঁর বাসস্থান। তা না জেনে বনে-জঙ্গলে কিংবা গয়া-কাশি-বৃন্দাবন, মক্কায় গিয়ে স্রষ্টার দর্শন অসম্ভব। মানুষ ছাড়া স্রষ্টা প্রকাশিত নয়, আবার স্রষ্টা ছাড়া মানুষও পরিপূর্ণ নয়। তাই সৃষ্টি আর স্রষ্টা একে অপরের প্রতিচ্ছায়া। লালন ফকির মানুষতত্ত্ব ও মানুষরূপে দীন দয়াময় শব্দটি দ্বারা স্রষ্টার আদি তত্ত্বকথা প্রচার করেছেন। যদি গভীর আত্মদর্শন দ্বারা আপন দেহ-মনের খবর হয়, তাহলে স্রষ্টারূপে পরমাত্মাকে জানা, বােঝা, উপলব্ধি ও দর্শন করা যায় না। তাই এই দেহ-মন, আত্মা, পরমাত্মা, রূপ, আকার ও সাকার নিয়েই লালনের কারবার। স্রষ্টার আসল রূপ ও পরিচয় পরিজ্ঞাত করানাের জন্যই লালন মনের ব্যাকুলতা।
- শিরোনাম লালন সমগ্র
- লেখক মোস্তাক আহ্মাদ
- প্রকাশক দি ইউনিভার্সেল একাডেমি
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯০৭০১৯১
- প্রকাশের সাল ২০১৫
- মুদ্রণ 1st
- বাঁধাই hardcover
- পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮০০
- দেশ বাংলাদেশ
- ভাষা বাংলা
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।