কাজী নজরুল ইসলাম জন্মশতবার্ষিকী : স্মারকগ্রন্থ
লেখক: আবদুল মান্নান সৈয়দ (সম্পাদক)
বিষয়: আত্মজীবনী/আত্মকথা/স্মৃতিকথা
বইয়ের বিবরণ
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) আবহমান বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবিদের অন্যতম। বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে দাঁড়িয়ে আজ মনে হয়, মূলত-মর্মত কবি হলেও সমগ্র বাঙালি সমাজ-সংস্কৃতিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্যতীত আর কেউ এমন ব্যাপক গভীরভাবে প্রভাবিত-উজ্জীবিত করতে পারেননি। নজরুল একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক, গীতিকার, গীতালেখ্য-ও-গীতিনাট্য-রচয়িতা; সুরকার, স্বরলিপিকার, গায়ক, বাদক, সংগীতজ্ঞ, সংগীত-পরিচালক; সাংবাদিক, সম্পাদক, পত্রিকা-পরিচালক; অভিনেতা, চলচ্চিত্র-কাহিনীকার, চলচ্চিত্র পরিচালক। কিন্তু তাঁর প্রধান পরিচয় কবি হিসেবেই। তাঁর প্রতিভার তাবৎ বিচ্ছুরণ কবিতার কেন্দ্র থেকেইÑকবিতার রশ্মি ও জল তাঁর সমস্ত শিল্পকর্মে সঞ্চালিত ও প্রবাহিত। তারপর আবার এও সত্যি যে, এত বিচিত্র ক্ষেত্রে এত সাবলীল সচ্ছলতা, আর তাও মাত্র সৃষ্টিশীল তেইশ বছরে (১৯১৯-৪২), একটি প্রাকৃতিক ঘটনা বলেই মনে হয়। জন্মেছিল এক ঝোড়ো রাতে, ১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দÑখ্রিস্টাব্দ ২৪শে মে ১৮৯৯-এ। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে। কবির নয় বছর বয়সে পিতার মৃত্যুÑকবির জীবনসংগ্রাম শুরু। এক অজ্ঞাত কারণে মাতার সঙ্গে কবির সম্পর্ক কখনোই ভালো হয়নি। রুটির দোকানে চাকরিÑতারই মধ্যে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলেন, প্রবেশাধিকার চৌকাঠ পেরোনো হয়নি আর। তারপর ৪৯ নম্বর বাঙালি পল্টনে নাম লিখিয়ে করাচিতে যান। যুদ্ধ অবশ্য করেননিÑকিন্তু চিরকালের মতোই ‘সৈনিক কবি’ হিসেবে চিহ্ণিত হয়ে যানÑতার কারণ বাংলা ভাষায় নজরুলই প্রথম প্রকৃত ‘যুদ্ধ কবিতা’ লেখেন। ছোটোবেলায় চাচার কাছে ফারসি ভাষা-সাহিত্যে পাঠ নিয়েছিলেন, লেটোর দলে যোগ দিয়ে লিখতেন ও গান গাইতেন। ১৯১৯ সালে লেখক হিসেবে প্রথম আত্মপকাশ: করাচি থেকে পাঠানো গল্প-কবিতা ছাপা হতে থাকে। ১৯২১ সালে কুমিল্লায় সৈয়দা খাতুন ওরফে নার্গিস বেগমের সঙ্গে আক্দ্। বিয়ের রাতেই নজরুল দৌলতপুর ত্যাগ করেন এবং নার্গিসের সঙ্গে কখনো একত্রবাস করেননি। ঐ ১৯২১ সালের শেষে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লেখেন রাত জেগে। ১৯২২ সালের প্রথমে কবিতাটি ‘বিজলী’, ‘মোসলেম ভারত’ এবং আরো কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে নজরুলকে রাতারাতি অসম্ভব বিখ্যাত করে দ্যায়। ‘বিদ্রোহী কবি’ চিরকালের মতো এই অভিধা যুক্ত হয়ে যায় কবির নামের সঙ্গে। গ্রন্থকাররূপে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন ১৯২২ সালে। এই বছরই প্রকাশিত হয় কবির প্রথম গল্পগ্রন্থ “ব্যথার দান”, প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ “যুগ-বাণী” ও প্রথম কবিতাগ্রন্থ “অগ্নি-বীণা”। ১৯৪২ সালে কবি স্বয়ং অসুস্থ ও নির্বাক হয়ে যান। যে লেখকদের রচনা এ স্মারকগ্রন্থে সংকলিত হয়েছে : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সুভাষচন্দ্র বসু, বিপিনচন্দ্র পাল, মোহিতলাল মজুমদার, জীবনানন্দ দাশ, বুদ্ধদেব বসু, কাজী আবদুল ওদুদ, সঞ্জয় ভট্টাচার্য, সৈয়দ আলী আহসান, আবদুল কাদির, আবু রুশ্দ, সুশীলকুমার গুপ্ত, আবুল হোসেন, কল্পতরু সেনগুপ্ত, কাজী দীন মুহম্মদ, রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত, মুহম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, আনিসুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামন, আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ, সানাউল্লাহ নূরী, আতাউর রহমান, আবদুস সাত্তার, আসাদুল হক, খালিদ হোসেন, শাহাবুদ্দীন আহমদ, আবদুল্লা আবু সায়ীদ, শিশির কর, বাঁধন সেনগুপ্ত, খালেদা হানুম, মুহম্মদ নূরুল হুদা, ভূঁইয়া ইকবাল, আহমদ কবির, শফিউল আলম, রাজীব হুমায়ূন, আবুল কাসেম ফজলুল হক, ময়ুখ চৌধুরী, রফিকউল্লাহ খান, সবিহ্-উল আলম, নীলুফার ইয়াসমিন, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অনুপম হায়াৎ, সুদেষ্ণা চক্রবর্তী, বাবু রহমান, আহমাদ মাযহার, হাসান আলীম, মুহাম্মদ আইয়ুব হোসেন, সৈয়দা নাজমুন নাহার, আবদুল মান্নান সৈয়দ।
- শিরোনাম কাজী নজরুল ইসলাম জন্মশতবার্ষিকী : স্মারকগ্রন্থ
- লেখক আবদুল মান্নান সৈয়দ (সম্পাদক)
- প্রকাশক অ্যাডর্ন পাবলিকেশন
- আইএসবিএন ৯৮৪৮১৯৩১৭১
- প্রকাশের সাল ২০০১
- মুদ্রণ 1st Published
- বাঁধাই হার্ডকভার
- পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫৫৪
- দেশ বাংলাদেশ
- ভাষা বাংলা
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
আবদুল মান্নান সৈয়দ
জন্ম ৩ আগস্ট ১৯৪৩, পশ্চিম বাংলার চব্বিশ পরগনায়। চার বছর বয়সে জন্মগ্রাম ছেড়ে আসেন। বড় হয়েছেন ঢাকা শহরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ও এমএ। সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। পরে নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক হন। কবিতা, কথাশিল্প, নাটক, প্রবন্ধ, গবেষণা, সমালোচনা, অনুবাদ, সম্পাদনা সব মিলে তাঁর বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই: প্রবন্ধ-গবেষণা—শুদ্ধতম কবি, করতলে মহাদেশ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, নজরুল ইসলাম: কালজ কালোত্তর; কবিতা—জন্মান্ধ কবিতাগুচ্ছ, জ্যোৎস্না রৌদ্রের চিকিৎসা, পরাবাস্তব কবিতা ; গল্প—সত্যের মতো বদমাশ, চলো যাই পরোক্ষে ; উপন্যাস—পরিপ্রেক্ষিতের দাসদাসী, কলকাতা, অ-তে অজগর। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক। মৃত্যু ৫ সেপ্টেম্বর ২০১০, ঢাকা।