ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা
লেখক: সৈয়দ আবুল মকসুদ
বিষয়: পুরস্কারপ্রাপ্ত, বাংলাদেশ, নির্বাচিত বই
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস নয়, বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের বস্ত্তনিষ্ঠ বিশ্লেষণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ভেতর দিয়ে পূর্ব বাংলায় এক আলোকিত নবযুগের সূচনা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা-পর্বের আজও-অজ্ঞাত দুর্লভ তথ্যসমৃদ্ধ এই গবেষণাগ্রন্থ বাংলাদেশের আধুনিক উচ্চশিক্ষার আদিপর্ব সম্পর্কে এক প্রামাণ্য দলিল। এতে রয়েছে শতাব্দীর প্রথম দিকের সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থারও তথ্যপূর্ণ বিবরণ ও বিশ্লেষণ।
বইয়ের বিবরণ
ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল এই ভূখণ্ডের মানুষের বহুদিনের স্বপ্ন। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরুর ভেতর দিয়ে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়। সেই বিদ্যাপীঠের জন্মবৃত্তান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা। ঔপনিবেশিক আমলে অবিভক্ত বাংলার কোন আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি ওঠে, সে ইতিহাসও এ গ্রন্েথ বর্ণিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবির সমর্থনে কার কী ভূমিকা এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে শ্রেণিগত অথবা সম্প্রদায়গত স্বার্থ থেকে যেসব তৎপরতা ছিল তার বস্ত্তনিষ্ঠ বিবরণ শুধু নয়, বিশ্লেষণও রয়েছে এতে। বহু বছরের শ্রমসাধ্য গবেষণার ফসল এই গ্রন্থ। বহু দুর্লভ তথ্য ও উপাদান সংগৃহীত হয়েছে প্রাথমিক সূত্র থেকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংক্রান্ত আজও-অজ্ঞাত বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ঘটনা যেমন উঠে এসেছে এ বইটিতে, তেমনি রয়েছে সেকালের ঢাকার সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবন এবং নগরীর নৈসর্গিক পরিবেশের হার্দ্য বর্ণনাও। প্রথম পর্যায়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ও নিবেদিত অধ্যাপকদের অবদানও আলোচিত হয়েছে এই গ্রন্েথ।
- শিরোনাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা
- লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯১৭৬৩০৫
- পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪০৭
- দেশ বাংলাদেশ
- ভাষা বাংলা
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
সৈয়দ আবুল মকসুদ
জন্ম মানিকগঞ্জে, ১৯৪৬ সালে। বাংলাদেশের বিশিষ্ট লেখক-গবেষক, জনপ্রিয় কলামিস্ট, পরিবেশ ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ও মানবাধিকার কর্মী। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্েথর মধ্যে রয়েছে: কবিতা: বিকেলবেলা, দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা ; প্রবন্ধ: যুদ্ধ ও মানুষের মূর্খতা, বাঙালির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন, ঢাকায় বুদ্ধদেব বসু প্রভৃতি; জীবনী: সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, গোবিন্দচন্দ্র দাসের ঘর-গেরস্থালি ; ভ্রমণকাহিনি: জার্মানীর জার্নাল, পারস্যের পত্রাবলি। বাংলাদেশে গান্ধী-গবেষণার পথিকৃৎ। তাঁর গান্ধী-বিষয়ক গ্রন্থ: Gandhi, Nehru and Noakhali ও Gandhi Camp। চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ঋষিজ পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। মৃত্যু: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১
প্যাকেজ: পুরস্কারপ্রাপ্ত
সৈয়দ আবুল মকসুদ, আকবর আলি খান, হরিশংকর জলদাস, শাহাদুজ্জামান, রায়হান রাইন, ফারুক চৌধুরী, আনিসুজ্জামান, জব্বার আল নাঈম
৩,৪৩৫.০০ টাকা ৪,৫৮০.০০ টাকা
আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন
Farhana Binti Amin
২৮ Feb, ২০২৩ - ৯:০০ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতির অস্তিত্ব,ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে।১৯৫২'র ভাষা আন্দোলন কিংবা ১৯৬২'র শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে, সকল ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে বাঙালী জাতিকে। প্রতিষ্ঠালগ্ন ১৯২১ সাল থেকে ১৯৭১ সাল –এই ৫০বছরে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যয়ন করেছে তাদের বৃহৎ অংশই স্বাধীনতা পরিবর্তী দেশকে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে ভূমিকা পালন করেছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রার মধ্যে দিয়ে বাঙালির উচ্চশিক্ষা, আধুনিকতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার সূচনা হয়।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলের সাথে জড়িয়ে আছে ইতিহাস,কিংবদন্তি। এজন্য,এ বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচয় দিলে এর ঐতিহাসিক দিক অবমূল্যায়ন করা হয়। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করা হলে হিন্দু জমিদার শ্রেণি, পশ্চিমবঙ্গের অনেকেই ব্রিটিশ সরকারের কঠোার বিরোধতা করে।প্রতিবাদের মুখে ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি লর্ড হার্ডিঞ্জ বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করেন।বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করা হলে পূর্ববঙ্গের নেতৃবৃন্দ আশাহত হন।নবাব সলিমুল্লাহ, নওয়াব সৈয়দ আলী চৌধুরী, এ কে ফজলুল হকসহ একটি প্রতিনিধি দল লর্ড হার্ডিঞ্জের সাথে দেখা করেন।বঙ্গভঙ্গ রূের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবী জানান।ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধতা করে পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গের নানা স্থানে মিছিল হয়।এমনকি হিন্দু বুদ্ধিজীবী প্রতিনিধি দল ১৮বার স্মারক লিপি প্রেরণ করে যাতে লর্ড হার্ডিঞ্জের কাছে।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রথমে বিরোধিতা করেন,পরে চারটি অধ্যাপক পদ দিয়ে রফা হয়। অধ্যায় বিন্যাস বইটি পাঁচটি অধ্যায়ে সাজানো হয়েছে।ভূমিকায় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রেক্ষাপট,হিন্দু-মুসলিম উভয়ের অবস্থান,সহযোগী নেতৃবৃন্দ -নবাব সলিমুল্লাহ, সৈয়দ শামসুল হুদা,নওয়াব আলী চৌধুরীর ও ফজলুল হকের জোরালো অবদানের কথা উঠে এসেছে। দ্বিতীয় ভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো,এলাকাগত বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করা হয়েছ।তৃতীয় অধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন ও সেসময়ের স্মৃতিকথা এবং চতুর্থ অধ্যায়ে প্রশাসন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এসেছে।এছাড়াও বিভিন্ন আলোকচিত্র, সাক্ষাতকার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। লেখকের বইটির তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে শুরু করেন ১৯৭০ এর দশকের শেষ দিকে।তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে নেশ হিমশিম খেতে হয় তাঁকে।অনেক জরুরী দলিল কাগজপত্র সংরক্ষণের অভাবে কালেরগর্ভে হারিয়ে গেছে।ইতিহাসকে ভুলে গেলে জাতি একসময় ধ্বংসের দিকে পতিত হয়।যেই বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি না হলে বাঙালর আধুনিক শিক্ষিত গোষ্ঠী উদ্ভব হতো না,একটা জাতি জাতীয়তাবাদী চেতনা থেকে স্বাধীনতা লাভ করতো না।সেই ইতিহাসকে বিস্মৃত না হতেই সৈয়দ আবুল মকসুদ সময় নিয়ে গবেষণা করে বইটি জাতির কল্যাণে উপস্থাপন করেছেন। সৈয়দ আবুল মকসুদ কর্মজীবনে সাংবাদিক ছিলেন।গবেষণাধর্মী বইসহ নানা বিষয়ের উপর সবমিলিয়ে ৩৫টির বেশী গ্রন্থের রচয়িতা।এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো 'ভাসানি কাহিনী','কাগমারি সম্মেলন','নবাব সলিমুল্লাহ ও তার সময়' এবং 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা'। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা সৈয়দ আবুল মকসুদ মূল্য: ৳৬৫০ প্রকাশনী: প্রথমা প্রকাশন #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা