পদ্মানদীর মাঝি

লেখক: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

বিষয়: উপন্যাস

২২৫.০০ টাকা ২৫% ছাড় ৩০০.০০ টাকা

 পদ্মানদীর মাঝি ঔপন্যাসিক মানিক বন্দোপাধ্যায় রচিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পঠিত, আলোচিত ও একাধিক বিদেশী ভাষায় অনূদিত জনপ্রিয় একটি উপন্যাস। নদীর বুকে শত শত জেলে নৌকার আলো জোনাকীর মত ঘুরে বেড়ায়। অন্ধকারের মধ্যে আলো দুর্বোদ্ধ। রাতে সারা পৃথিবী যখন নিদ্রামগ্ন তখন আলোগুলো থাকে অনির্বাপিত। এই আলোতে ইলিশের নিষ্পলক চোখগুলো হয়ে ওঠে স্বচ্ছ নিলাভ মনি সদৃশ্য। রাত্রিকালের জেলে নৌকার এই বর্ণনা ছাড়া লেখক উপন্যাসের একাধিক স্থানে পদ্মার রূপ অংকন করেছেন। পদ্মানদীর মাঝি উপন্যাসটি মানিক বন্দোপাধ্যায়ের আধুনিক বাংলা উপন্যাসের একটি বিশিষ্ট সংযোজন। জীবন জীবিকার তাগিদে পদ্মানদীর সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত মানুষের জীবন কাহিনী। 

পছন্দের তালিকায় রাখুন

বইয়ের বিবরণ

আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

এই লেখকের আরও বই
এই বিষয়ে আরও বই
আলোচনা ও রেটিং
৫(১)
  • (১)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
আলোচনা/মন্তব্য লিখুন :

আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন

অনন্যা

২৮ Feb, ২০২৩ - ১১:৪৩ PM

বই পর্যালোচনা: " পদ্মানদীর মাঝি" উপন্যাসে কীর্তিনাশা পদ্মানদীর তীর সংলগ্ন কেতুপুর ও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষের জীবন ও জীবিকার চালচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। উপন্যাসের নায়ক অর্থাৎ প্রধান চরিত্র হতদরিদ্র কুবের পদ্মান দীর মাঝি যিনি অন্যান্য সঙ্গীদের নিয়ে পদ্মা নদীতে মাছ ধরে। সংসারে তার স্ত্রী মালা, একমাত্র মেয়ে গোপী, তিন ছেলে ও বোনকে নিয়ে অতি কষ্টে তার জীবন চলে। মালা ছিলো খোড়া। গোপী আর কুবেরের বোন ঘরের কাজ সামলায়। স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে মালার বোন কপিলা এসে ঠাঁই নেয় কুবেরের দরিদ্র সংসারে। কপিলা তার রুপ যৌবন দিয়ে কুবেরকে আদিম আকর্ষণে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে চায়। গড়ে তুলতে চায় আদিম, অসংস্কৃত ও নিষিদ্ধ প্রেম। উপন্যাসটির অন্যতম চরিত্র হোসেন মিয়া। কেতুপুর এলাকায় দীনহীন ও কপর্দকশূন্য এই লোকটির হঠাৎ ভাগ্য পরিবর্তন ও জেলে মাঝিদের মাঝে পরম বন্ধুরুপে তার আবির্ভাব এক রহস্যের সৃষ্টি করে। গ্রামের অনেক পরিবার হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা জেলে মাঝিদের মনে আরো বেশি রহস্যের সৃষ্টি করে। তাছাড়া উপন্যাসের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলো হলো ধনঞ্জয়, শীতল, সিধু দাস, রাসু, বৈকুন্ঠ, অধর পীতম, হীরু প্রমুখ। ☆ ব্যক্তিগত মন্তব্য : বাস্তবিক অর্থে উপন্যাস হবে উপভোগ্য, আনন্দসঞ্চারী ও আনন্দদানকারী। ঔপন্যাসিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মানদীর মাঝি এমন একটি উপন্যাসের বই যার মধ্যে রয়েছে এই বৈশিষ্ট্যগুলো। বইটি আমি যতবার পড়ি ততই যেন হারিয়ে যাই এর গভীরতায়। আমার কাছে উপন্যাসটির সার্বিক দিক এতটাই প্রাণবন্ত মনে হয় যেন আমি নিজে উপন্যাসের প্রতিটি জায়গায় উপস্থিত থেকে প্রতিটি ঘটনা নিজ চোখে অবলোকন করছি। কপিলা কুবেরের আদিম আকর্ষণে তাদের নিষিদ্ধ প্রেমের সম্মুখে এগিয়ে যাওয়া, হোসেন মিয়াকে ঘিরে জেলে মাঝিদের রহস্যের জাল বোনা, শোষক মহাজনদের শোষণের চিত্র সবমিলিয়ে উপন্যাসটির এই প্রাণবন্ত ভাব আমাকে বাধ্য করে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টিয়ে সামনে যেতে এবং সম্পূর্ণ বইটি উপভোগ করতে। আমার মতে লেখকের সফলতা তখনই আসে যখন পাঠককে সে তার শব্দের মূর্ছনায় বইয়ের ভিতর হারিয়ে যেতে বাধ্য করতে পারে। এক্ষেত্রে পদ্মানদীর মাঝি বইটির লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তা পেরেছেন। কারণ লেখক জেলেপাড়ার মাঝি ও জেলেদের জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না,অভাব-অভিযোগ যা কিনা প্রকৃতিগতভাবে সেই জীবনধারার অবিচ্ছেদ্য অংশ তা এমন ভাবে চিত্রিত করেছেন মনে হয় হুবুহু জেলেদের জীবনচিত্রটাই ফুটিয়ে তুলেছেন। উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মুখের আঞ্চলিক ভাষা উপন্যাসটিকে আরো বেশি রোমাঞ্চিত করেছে। একটি আঞ্চলিক উপন্যাসের সার্বিক দিক বিবেচনায় পদ্মানদীর মাঝি একটি সার্থক উপন্যাস। আমার পাঠক হৃদয় সার্থক এমন একটি চিরায়ত আঞ্চলিক উপন্যাস পড়তে পেরে। পদ্মানদীর মাঝি উপন্যাসটির বড় একটি ভালো দিক হলো সহজ সরল ভাষায় যত্নসহকারে উপন্যাসটির উপস্থাপনা। তাছাড়া বইটিতে রয়েছে কৃত্রিমিতাবিবর্জিত আঞ্চলিক ভাষার সুষ্ঠু প্রয়োগ। উপন্যাসটিতে রয়েছে চিরায়ত বাংলার হতদরিদ্র মানুষের নিখুঁত জীবনচিত্র। তাদের অসহায়ত্বকে আমরা দূর থেকে কখনো উপলব্ধি করতে পারি না। কিন্তু লেখক বইটিকে এমনভাবে সাজিয়েছেন যাতে আমরা তা খুব সহজে কিন্তু গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি। যে কোনো মহৎ উপন্যাসই পাঠকের হৃদয়কে এক মহৎ আনন্দে আপ্লুত করে, জীবন ও জগৎ সম্পর্কে মহৎ উপলব্ধিতে পরিপূর্ণ করে তোলে। পদ্মানদীর মাঝি উপন্যাসটি সেরকমই একটি উপন্যাস। তাছাড়া উপন্যাসের নায়ক কুবের আর কপিলার আদিম আকর্ষিত প্রেমের শেষ পরিণতি কি হয়? রহস্যময় হোসেন মিয়ার রহস্যের উদঘাটন করতে পাঠককে অবশ্যই পড়তে হবে পদ্মানদীর মাঝি বইটি। প্রিয় উক্তি: ১.ঈশ্বর থাকেন ঐ গ্রামে, ভদ্র পল্লীতে- এখানে তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া দুস্কর। ২. গরীবের মধ্যে সে গরীব, ছোটলোকের মধ্যে আরও বেশি ছোটলোক। জেনে নিই: বইয়ের নাম : পদ্মানদীর মাঝি লেখক: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বইয়ের ধরন : আঞ্চলিক উপন্যাস #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা