পুরানো সেই দিনের কথা একজন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্বের জীবনের উন্মেষ ও বিকাশের কাহিনি। নবীনগরের জলাভূমিতে লালিত সাদাসিধে বালকটি ছিলেন কল্পনাবিলাসী ও অন্তমুর্খী। মুখচোরা বালকটি মাঠপর্যায়ের প্রশাসক হন। দায়িত্ব নেন আইনশৃঙ্খলা, ভূমি প্রশাসন, উন্নয়ন প্রশাসন, নির্বাচন, এমনকি চা-বাগানের মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার। এর মধ্যে দেখা দেয় মুক্তিযুদ্ধের টালমাটাল দিনগুলো। এই পরিস্থিতিতে লেখকের অভিজ্ঞতা সাধারণ পাঠকদের ভালো লাগবে এবং বর্তমান প্রশাসকদের কাজে লাগবে।
বইয়ের বিবরণ
পুরানো সেই দিনের কথা আকবর আলি খানের আত্মজীবনী। এ আত্মজীবনী লিখতে গিয়ে লেখক তাঁর পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে লিখেছেন আবার নবীনগরের প্রেক্ষাপট সম্পর্কেও লিখেছেন। ছোটবেলা থেকে লেখক ছিলেন বইপাগল। তবে নবীনগরে ভালো বই পাওয়া যেত না। ভালো বই পড়ার অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা মিটত ঢাকায় এলে। তিনি হন তুখোড় পাঠক। এই পাঠকই একদিন পড়তে পড়তে এবং গবেষণা করতে করতে লেখকে পরিণত হন। অবশ্য কোনো বই-ই দীর্ঘদিন গবেষণা ছাড়া তিনি লেখেন না। তাঁর প্রথম বই বের হয় ৫২ বছর বয়সে। ব্যক্তিগত জীবনে লাজুক এই লোকটি জীবিকার জন্য যোগ দেন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে। সিভিল সার্ভিসের বিচিত্র কাজের অভিজ্ঞতা তাঁকে মুখোমুখি করে নানা চ্যালেঞ্জের। এই অভিজ্ঞতার বিবরণ পাঠকদের কাছে পড়তে ভালো লাগবে। লেখক মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এই বইয়ের তিনটি অধ্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকারের ক্রিয়াকাণ্ড বর্ণনা করেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অধ্যায়গুলোতে মুক্তিযুদ্ধের বস্ত্তনিষ্ঠ ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে।
- শিরোনাম পুরানো সেই দিনের কথা
- লেখক আকবর আলি খান
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- প্রকাশের সাল ২০২২
- মুদ্রণ 2nd
- বাঁধাই Hardcover
- দেশ বাংলাদেশ
- ভাষা বাংলা
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
আকবর আলি খান
জন্ম ১৯৪৪ সালে। ইতিহাসে অনার্স ও এমএ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ ও পিএইচডি। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন: পাকিস্তানি জান্তা তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। বাংলাদেশ সরকারের অর্থসচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ছিলেন, উপদেষ্টা ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের। বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। অর্থনীতি বিষয়ে তাঁর দুটি পাঠকপ্রিয় গ্রন্থ পরার্থপরতার অর্থনীতি এবং আজব ও জবর-আজব অর্থনীতি। তাঁর Discovery of Bangladesh I Some Aspects of Peasant Behavior in Bengal বই দুটি দেশে-বিদেশে প্রশংসিত। তাঁর আরও দুটি উল্লেখযোগ্য বই Gresham’s Law Syndrome and Beyond I Friendly Fires, Humpty Dumpty Disorder and Other Essays। জীবনানন্দ বিষয়ে লিখেছেন চাবিকাঠির খোঁজে। তাঁর বাংলা রচনা সম্পর্কে কলকাতার দেশ পত্রিকার মন্তব্য, ‘এই লেখক লিখতে জানেন।’
আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন
Asif Aman
১০ May, ২০২৩ - ১:০২ PM
nice
Samiur Rashid Abir
১৫ Mar, ২০২৩ - ৩:৩৬ AM
বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আকবর আলি খানের সাথে পরিচয় টিভিতে আব্বা যখন টকশো দেখতেন সেগুলার মারফতে। লেখক আকবর আলি খানের সাথে পরিচয় "পরার্থপরতার অর্থনীতি" বইটি দিয়ে। সহজবোধ্য ভাষায় অর্থনীতির দুর্বোধ্য বিষয়গুলো তুলে ধরার ব্যাপারে আকবর আলি খানের জুড়ি নেই। সুন্দর গদ্যের অধিকারী আকবর আলি খানের আত্মজীবনী নিয়ে আগ্রহ ছিল তাই বেশি। সচরাচর আত্মজীবনীর সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেকরকম। কেউ হয়ত সহজ স্বীকারোক্তি দিয়ে বসেন কিংবা কেউ হয়ত নিজের প্রেক্ষাপট থেকে স্বীয় ঘটনাগুলো ব্যাখা করেন। আকবর আলি খান বইয়ের শুরুতেই তাঁর উদ্দেশ্য সম্পর্কে খোলাসা করে নিয়েছেন, যে তিনি সৎ আত্মজীবনী লেখার চেষ্টা করেছেন। বিচারকের ভূমিকায় সততা নিয়ে অত কঠোরভাবে কাঠগড়ায় দাঁড়া করানো যাবে কিনা তা নিয়ে আমি সন্দিহান তবে স্বাদু গদ্যের জন্য বইখানা উপভোগ করেছি অনেক। লেখক নিজের জীবনের প্রথম ২৯ বছরের বিষদ বিবরণ দিয়েছেন। নবীনগর থেকে ঢাকা কলেজ অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর পাট চুকিয়ে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস এ যোগদান আস্তে আস্তে ফুটে এসেছে ধারাবাহিকভাবে। কিন্তু প্রথম ৬০-৭০ পৃষ্ঠায় বাঁধল বিপত্তি। তথ্যের ভারে যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম। কেননা খাঁ বংশের ২০০ বছরের সমস্ত পূর্বপুরুষের বংশলতিকা তিনি তুলে ধরেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকানোর পর পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে নির্বাচিত হওয়া এবং প্রশিক্ষণ সময়কালীন বিবরণ টা রোমাঞ্চকর ছিল। তবে দূর্বল অংশ লেগেছে যখন নিজের ব্যাচমেট অথবা যত শত ব্যক্তির বর্ণনা এসেছে এবং তাদের শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের অতি বিশদ বিবরণ সংযোজন করায়। এসডিও হিসাবে যেসব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন তিনি হয়েছেন সেসব ও নির্দ্বিধায় তুলে ধরেছেন। আকবর আলি খানের ভাষ্যে, সিএসপি ছিল পাকিস্তানের স্টিল অফ ফ্রেম। সিএসপি অফিসার রাই এক হাজার মাইল দূরত্বে দুটি ভিন্ন দেশের প্রশাসন অব্যহত রেখেছেন। সে ইস্পাত-দৃঢ় আনুগত্য ছেড়ে যুদ্ধে যোগদান করে লার্নেড ম্যান আকবর আলি খান যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। আকবর আলি খান ভাবেন নি লেখক হবেন কিন্তু জীবনের ৫০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। বিষয়টা আমাদের মতন পাঠকের জন্য সুখকর কেননা আকবর আলি খানের মতন প্রাজ্ঞ ব্যক্তির জ্ঞানের ছোঁয়া পাওয়ার সুযোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতি অনেক আগেই নষ্ট করে দিয়েছিল। তবুও এই বিচিত্রময়ের জীবনের অনেক চিন্তাধারা সাধারণ পাঠকের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন সে এক পাওনা বটে। আত্মজীবনীর পরবর্তী ও মূল আকর্ষণ দ্বিতীয় খণ্ডের অপেক্ষায়। #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা
Md Mizan
২৮ Feb, ২০২৩ - ১২:১৩ PM
আকবর আলী খানের মতো একজন বিচিত্র মানুষ যখন লেখেন তখন সাধারণ পাঠক বইটি না পড়ে পারে না । তার লেখা আত্মজীবনীমূলক পুরানো সেই দিনের কথা প্রথম খন্ড লিখে যেতে পারলেও তবে মহান রব্বুল আলামীনের ডাকে সাড়া দিয়ে ২০২২ সালে চলে গেছেন তিনি। তার ইচ্ছা ছিল প্রথম খন্ড লেখার পরে দ্বিতীয় খণ্ড লেখা । বইটি লিখতে সাহায্য করেছেন প্রথমার কম্পিউটার অপারেটর। তিনি নিজে টাইপিং, লেখা লেখির কাজ করতে পারতেন না। তার মাঝে স্ত্রী ও সন্তান হারানোর বেদনা তো ছিলই । তার সন্তান বেশি তাকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাংবাদিকদের চাওয়া ছিল তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় তথ্যাদি তুলে ধরুন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পদে চাকরি করেছেন তবে নিজে থেকেই পরবর্তীকালে পদত্যাগ করেছ্ন। বইটিতে তিনি তুলে ধরেছেন তাঁরবাড়ির কথা পূর্বপুরুষের কথা । তাছাড়াও তার জীবনের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন ঘটনা । ছাত্র জীবন থেকেই তার বই পড়ার প্রতি আগ্রহ । তিনি একজন একনিষ্ঠ পাঠক ছিলেন তবে ঢাকা নবীনগর থাকার ফলে বিভিন্ন বই সংগ্রহ করতে পারতেন না । তবে ঢাকা শহরে এলেই প্রথমেই বই সংগ্রহ করতেন। বইয়ের প্রতি এমন ভালোবাসা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। তাঁর প্রথম বই 52 বছর বয়সে প্রকাশিত হয় ।সরকারের গোপন তথ্য প্রকাশ করতে চাননি তবে কিছু কিছু প্রকাশ করেছেন। দেশে দুর্নীতি অর্থনীতি পেশা জীবনের বিভিন্ন চড়াই-উতরাইয়ের কথা সম্পর্কে অনেক বলেছেন । আত্মজীবনী লেখার শুরুতেই বলেছেন মানুষ কখনোই সত্য বলতে চায় না তার ভালো কাজগুলোকে, সাফল্যকে অতিরঞ্জিত করে প্রকাশ করে। যেটি খুবই নজরকাড়া। সকলের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে বইটি পড়ে দেখার জন্য। আমাদের আগামী প্রজন্মকে বইটি একটি রূপরেখা দেখাবে। #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা
Adrin Sarwar
২১ Feb, ২০২৩ - ৮:৫৯ PM
সাহিত্যিক ডব্লিউ এইচ অডেন এর মতে, আত্মজীবনী হলো অতিরঞ্জন ও সত্যের সংমিশ্রণ। আকবর আলি খান রচিত " পুরোনো সেই দিনের কথা" ঠিক তেমনি একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। লেখক আত্মজীবনীটি রচনা করেছেন মূলত তার মেয়েকে দেওয়া কথা রক্ষা করার জন্য এবং তার আম্লাতান্ত্রিক দায়বদ্ধতা থেকে। গ্রন্থটিতে লেখকের পূর্বপুরুষের সবিস্তার ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। লেখকের শৈশব, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, আমলাতান্ত্রিক জীবণের সূচনার বিভিন্ন দিক এতে বর্ণনা করা হয়েছে। আমলাতান্ত্রিক জীবণের বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন বাঁধার কথা কথা বলেছেন। বলেছেন মুক্তিযুদ্ধে তার সক্রিয় ভূমিকার কথা। আমলাতান্ত্রিক জীবণ-যাপন করার সময় লেখকের জীবণ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠে। পল্ ওয়াট্সনের একটি উক্তির মাধ্যমে তিনি তা বর্ণনা করেন। "Everybody is a hypocrite. You can not live on this planet without being a hypocrite". লেখকের এরূপ দৃষ্টিভঙ্গি জীবণ সম্পর্কে আমার মতবাদ পাল্টে দিয়েছে। দোটানা থেকে বের হয়ে জীবণকে উপভোগ করা, খোলা চোখ নিয়ে আমার চারপাশ দেখা, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সাহায্য করে। আকবর আলি খান এর লেখার বিশেষ দিক হলো, তার লেখার তথ্যবহুলতা। "পুরোনো সেই দিনের কথা" গ্রন্থটিতে তথ্যের নির্ভূলতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় এর রেফারেন্সিং এর মাধ্যমে। তার একেকটি লেখা দীর্ঘদিনের পর্যালোচনা ও গবেষণার ফসল। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে তার ভাবনার শুরু ১৯৬১ সালে তার জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে। এ সম্পর্কে তার বই ' ভাবনা ও দুর্ভাবনা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে প্রকাশিত হয় ৫৮ বছর পর ২০২৯ সালে। এরূপ দীর্ঘ পর্যালোচনার ফলে অনেক বিষয় সম্পর্কে তার নিজস্ব মতবাদ দাঁড়িয়ে যায়। এর প্রতিফলন দেখা যায় তার লেখার মধ্যে। তার লেখার ধরণ এমন যে তা খুব সহজেই পাঠকের কাছে পৌঁছাতে পারে। আত্মজীবনীধর্মী গ্রন্থর অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি হলো অতিরঞ্জন। জনৈক সমালোচক ঠিকই বলেছেন, " There is no such thing as autobiography, there is only art and lies". "পুরোনো সেই দিনের কথা"-ও হয়তো সেই বৈশিষ্ট্য রক্ষার স্বার্থেই অতিরঞ্জনের শিকল থেকে মুক্ত নয়। লেখকের প্রায় ২০০ বছরের পারিবারিক ইতিহাসের বর্ণনায় এর কিছুটা ছাপ পাওয়া যায়। আকবর আলি খানের অন্যান্য গ্রন্থগুলো বিভিন্ন বিষয়ে তার নিজস্ব মতবাদ বুঝতে সাহায্য করে। কিন্তু ব্যক্তি আকবর আলি খান সম্পর্কে জানতে "পুরোনো সেই দিনের কথা" অদ্বিতীয়। কিশোর থেকে বৃদ্ধ শ্রেণির যেকোনো পাঠক বইটি পড়তে পারেন। কারণ এর লিখনশৈলী, উপস্থাপনা পাঠকবান্ধব। বইটির লিখনশৈলী, তথ্য, সম্পাদনা এর উপর ভিত্তি করে আমি ব্যক্তিগতভাবে ৪.৫/৫ দিব। "পুরোনো সেই দিনের কথা" আকবর আলি খানের আত্মজীবনীর প্রথম খন্ড। প্রকাশিত হয়েছে প্রথমা প্রকাশন থেকে। প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছেন মাসুক হেলাল। বইয়ের মুদ্রিত মূল্য ৬৫০ টাকা। বইটির প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি, ২০২২। এখন কেবল অপেক্ষা রচনার দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশের। আকবর আলি খান জন্মগ্রহন করেন ১৯৪৪ সালে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের অর্থসচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। উপদেষ্টা ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। আকবর আলি খান ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা
Shotabdi Bhattacharjee
০৪ Feb, ২০২৩ - ১১:২৯ AM
আত্মজীবনী আমার পছন্দের জনরার একটি। আমি বই কিনতে গেলে আত্মজীবনী এবং ভ্রমণকাহিনীর দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখি৷ আত্মজীবনী কেন ভালো লাগে এর উত্তর আমি নিজে নিজেই খোঁজার চেষ্টা করেছি। কী লাভ অন্য একজনের ব্যক্তিগত জীবন এবং তাঁর আদর্শ সম্পর্কিত কথাবার্তা পড়ে? কারো জীবনের সাথে তো কারোরটা মিলবে না। জীবনী পড়ার একটা বড় কারণ বিখ্যাতদের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজে সফল হওয়ার চেষ্টা করা বা অনুপ্রেরণা নেওয়া৷ তবে আমার ক্ষেত্রে বড় কারণ, যাঁদের আত্মজীবনী আমরা পড়ি, তাঁরা অধিকাংশই মারা গেছেন বা অতি বৃদ্ধ বা আরো কয়েক প্রজন্ম আগের। এর ফলে গ্রামীণ দৃশ্য এবং জীবনের যে মনোরম ছবিটা তাঁদের ছেলেবেলা থেকে পাওয়া যায়, আমাকে প্রচণ্ড টানে সেই সময়টা। ওই মধুর অতীতটা আমাকে নিজের অতীতেও ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এক ধরনের আয়না হিসেবে কাজ করে। একই সাথে ইতিহাসের নানা গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল সম্পর্কে এবং একজন রাষ্ট্রীয় বা ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কেও জানা যায় আত্মকাহিনী থেকে৷ এই কারণগুলো গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে কেবল চেনা নয়, এর অন্যান্য কারণই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আকবর আলি খানের অন্যান্য অর্থনীতি, সাহিত্য বিষয়ক বই পড়েই তাঁর লেখার মধ্যে একটা অন্য ধরনের সাবলীলতা খুঁজে পাই। তাঁর আত্মজীবনী বের হয়েছে, অথচ পড়ব না, এটা হতেই পারে না। তবে বইটি সম্পূর্ণ নয়। নানা কারণে অনেক কথাই সবসময় জীবিত অবস্থায় প্রকাশ করা যায় না, বিশেষত একজন রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির জন্য সেটা আরো কঠিন৷ তাই তাঁর বাকি জীবনকাহিনী প্রকাশিত হবে তাঁর মৃত্যুর পর। এই বইটিতে তাঁর শৈশবের নবীনগরে বেড়ে ওঠা, তাঁর পরিবার এবং বংশপরিচয় রয়েছে প্রথম ভাগে৷ ছাত্রজীবনের সব ক্ষেত্রেই মেধার স্বাক্ষর রেখে পরবর্তীতে প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখযোগ্য সময় পার করেন তিনি৷ সেই সময়ের অভিজ্ঞতাই এই বইটার প্রাণ৷ একই সাথে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন নানান অভিজ্ঞতার কথা। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর সাথে তিনটি স্মৃতিচারণের ঘটনা। লেখকের মতে, পৃথিবীর কোন মানুষই ১০০% সৎ না। ১০০% সৎ হয়ে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সম্ভব না। সকলের মাঝেই কমবেশি মুনাফেকি রয়েছে। এছাড়াও আত্মজীবনীতে সম্পূর্ণ সত্যকথন সম্ভব না, এইটাও শুরুতেই কবুল করে নিয়েছেন তিনি৷ বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী বর্ষীয়ান এই মনিষীর জীবনের গল্প নানান কারণে একজন পাঠকের কাছে আকর্ষণীয়৷ একই সাথে সাহিত্যক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করার মতো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম- কথাটা এই ক্ষেত্রে বলাটা সাজে না। তিনি আরো বেঁচে থেকে আমাদের আরো নানান মণিমুক্তা উপহার দিন, এই কামনাই বরং করি। (মৃত্যুর পূর্বে লিখিত) #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা
Kaosar Ahammad Ashik
২৯ Mar, ২০২২ - ৩:০২ PM
খুব সহজবোধ্য এবং তথ্যবহুল।