কাকতাড়ুয়া ও অন্যান্য গল্প

লেখক: মোস্তাফিজুর রহমান শুভ

বিষয়: কথাসাহিত্য, গল্প, বইমেলা ২০২২

১৫০.০০ টাকা ২৫% ছাড় ২০০.০০ টাকা

১২টি ছোটো গল্পের গল্পগ্রন্থ ‘কাকতাড়ুয়া ও অন্যান্য গল্প’। আমাদের জীবন যাপনের ঘটনাগুলোই এখানে এসে গল্পের রূপ পেয়েছে। আনন্দ, হতাশা, না পাওয়া অথবা পেয়ে যাওয়ার যে অদ্ভুত সমীকরণে আমাদের দৈনন্দিন বেঁচে থাকা, তার কিছু অংশই শব্দে শব্দে ঠাই নিয়েছে ‘কাকতাড়ুয়া ও অন্যন্য গল্প’ বইয়ে।

পছন্দের তালিকায় রাখুন

বইয়ের বিবরণ

আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

এই বিষয়ে আরও বই
আলোচনা ও রেটিং
৫(১)
  • (১)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
আলোচনা/মন্তব্য লিখুন :

আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন

Fardina Afrin

২৬ Feb, ২০২৩ - ৪:১৯ PM

#বই_ভাবনা #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ কাকতাড়ুয়া ও অন্যান্য গল্প লেখকঃ মোস্তাফিজুর রহমান শুভ প্রকাশনীঃ পেন্সিল পাবলিকেশনস মানুষের জীবনের বাস্তবতার সাথে কল্পনা, স্বপ্ন ইচ্ছেশক্তি দিয়ে মেলানো খুব কঠিন। কিন্তু তারপরেও স্বাভাবিক নিয়মেই মানুষ আশা করে থাকে পুরোটা না হলেও কিছুটা স্বপ্ন, কিছুটা কল্পনা বাস্তবতার সাথে মিলেমিশে যাবে। আর কল্পনা এবং স্বপ্নের সাথে বাস্তবতার মেলবন্ধন ঘটানোর সুতীব্র ইচ্ছাই যেন মোস্তাফিজুর রহমান শুভ এর “কাকতাড়ুয়া ও অন্যান্য গল্প” বই এর গল্পগুলোতে পাওয়া যায়। এছাড়া বইটি যেকোন বয়সী পাঠকের পড়ার জন্য উপযোগী। ১২টি গল্প নিয়ে সাজানো গল্পবইটির ‘এক সন্ধ্যা ঘুড়ি ও আমরা’, ‘শ্রোতা’, ‘কাকতাড়ুয়া ২’ এমন কিছু গল্প গভীরভাবে ভাবায়, নতুন দিনের স্বপ্ন দেখার ইচ্ছা জমায় আবার কিছু গল্প ‘অর্থী’, ‘অথৈ অথবা আমি’, ‘আকাশ ছুঁয়ে যাই’, ‘ক্লাস ক্যাপ্টেন’ নানারকম সম্পর্কের মায়া আর ভালবাসায় বেঁধে ফেলে। বই শেষ করেও আমি তাই গল্পগুলো আলাদা করে উলটে পালটে দেখি, কীভাবে একটা মানুষ তাঁর অসম্ভব ইচ্ছা পূরণ করে ঘুড়ি হয়ে গেল, কীভাবে শ্রোতা খুঁজতে থাকা এক জনপদ বাকশুন্য হয়ে পড়ল, কীভাবে একটি ছোট্ট মেয়ে কাকতাড়ুয়ার মায়ায় হারিয়ে গেল।আরো অনুভব করি দুই ভাই-বোনের খুনসুটি, মা হারানো ছেলের অভিমান, কিংবা প্রেমিকার হাসির রিভিউ দেওয়ার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলা সেই ছেলেটির অনুভূতি। যে কোন পাঠকই বই পড়ার সময় লেখার বিষয়বস্তু কিংবা লেখকের ভাবনার সাথে নিজের ভাবনার ধরণ সমান্তরাল করতে পারলে পুলকিত হন। আমিও তাঁর ব্যাতিক্রম নই। এই বই পড়তে গিয়ে সবথেকে ভাল লাগার বিষয় এটাই ছিল আমি আমার চিন্তাধারার সাথে গল্পগুলোকে রিলেট করতে পেরেছি। বইটি পড়ে মনেই হয়নি এটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ। প্রতিটি লেখা এতটাই পরিণত বোধ সম্পন্ন যে গল্পগুলো আমাকে ভাবিয়েছে, কিন্তু মানসিক দ্বন্দে ফেলে দেয়নি। কেবল মনে হয়েছে, আমি এমন কাজ হয়ত ভেবেছি বা ভাবার চেষ্টা করেছি আর লেখক সেইসব শব্দগুলো ভেঙ্গে চুরে জোড়া লাগিয়ে গল্প তৈরি করে ফেলেছেন এবং শুধু গল্পই তৈরি করেননি প্রতিটি গল্পে ব্যবহার করেছেন মন ছুঁয়ে যাওয়া কিছু উপমা; যেমনঃ ‘প্রার্থনার মত অপেক্ষা’, ‘ঝাউয়ের পাতায় আটকে পড়া বাতাসের মত এক গর্জন’, ‘শিশিরের মত জমতে থাকা সময়’, ‘পাথরকুচি গাছের মত বিশ্বাস’। লেখক গল্প কথার ফাঁকে ফাঁকে ছোট ছোট উপমাগুলো এতটা প্রাসঙ্গিকভাবে গেঁথে দিয়েছেন যেন ছোট্ট সাধারণ অনুভূতিকে অলংকারে সজ্জিত হয়ে গেছে। আর অলংকার সজ্জিত অনুভূতি নিয়ে বইটি শেষ করে ভাবনার জগতে ডুব দেই আর ভাবি – সত্যিই যদি পাথরকুচি গাছের মত আমাদের বিশ্বাসের ভীতগুলো শক্ত হত, সব হারিয়ে একটি ছেড়া পাতা থেকেও যেমন পাথরকুচি গাছ বেড়ে উঠে তেমন করেই হয়ত তখন জীবনে প্রত্যাশিত সবকিছুই আমাদের পাওয়া হত। কিন্তু আমরা শুধু ভাবি, কল্পনা করি অথচ নিজেই নিজের কল্পনাগুলো বিশ্বাস করি না। স্বপ্ন দেখেও সেটা বাস্তবে রুপান্তর করার সুযোগ না খুঁজেই সম্ভাবনা নেই বলে স্বান্ত্বনা খুঁজি আর সেই অসম্ভব ভাবা কাজটিও যখন কেউ করে ফেলে তখন একবুক হতাশা নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি। তাই, বইটি পড়ে আমার এখন পাথরকুচি গাছের মত বিশ্বাস নিয়ে স্বপ্ন দেখে ঘুড়ি হয়ে যেতে ইচ্ছা করে। যে ঘুড়ি হবার স্বপ্ন আমি দেখে এসেছি এতকাল, শুধু বিশ্বাসের জোরে হয়ে উঠার সুযোগ খুঁজিনি। পরিশেষে, “কাকতাড়ুয়া ও অন্যান্য গল্প’ বইটি পড়ুন, ভাবুন, হাসুন, আর নিজের কল্পনাকে বিশ্বাস করে প্রাণভরে স্বপ্ন দেখুন।