ইন্দ্রজাল: হাজার বছরের পিছুটান...

লেখক: জিমি তানহাব

বিষয়: রহস্য–রোমাঞ্চ, গোয়েন্দা ও ভৌতিক

১৮৭.৫০ টাকা ২৫% ছাড় ২৫০.০০ টাকা

বইয়ের বিবরণ

আমি একজন খ্রিষ্টান, কিন্তু এমন এক সময়ে বাস করছি, যেখানে জেসাসের এখনো আগমন ঘটেনি। ভবিষ্যৎ বলতে পারি আমি। না আমি কোন ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নই। আমি সায়মন অতি সাধারণ এক যুবক। জড়িয়ে গেছি এক জালে, যে জালে আটকে রয়েছি হয়তোবা হাজার বছর ধরে। প্যাগান মন্দিরের সিঁড়িটাই হয়েছিল আমার মাথা গুজবার ঠাই। আমার জন্য অপেক্ষা করছিল এক ভয়ংকর ভবিষ্যৎ। যে ভবিষ্যৎ আবার আমার নিকট ধরা দিয়েছিল বর্তমান হয়ে। উত্তাল সমুদ্র পারি দিয়ে নিজ রাজ্যেতো ফিরে এসেছিলাম। তারপরও সেটা আমার কাছে ছিল অচেনা কোন ভূখণ্ড। হাজার বছর ধরে যে মায়াবিনীর পেছনে ছুটে চলেছি সে ছিল আমার সহস্র অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাসের কারন। জুলিয়াস সিজারের ক্ষতবিক্ষত শরীর দেখেছি আমি। আর সেদিন শান্ত করতে পারিনি বিক্ষুব্ধ রোমবাসীকে। প্রত্নতত্বের মাঝে ইতিহাস খুঁজে ফেরা এক যুবক আমি। আজ নিজেই ইতিহাস হয়ে রইলাম।

  • শিরোনাম ইন্দ্রজাল: হাজার বছরের পিছুটান...
  • লেখক জিমি তানহাব
  • প্রকাশক ঐতিহ্য
  • আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৭৭৬৫০২০
  • প্রকাশের সাল ১st Published, ২০১৯
  • দেশ বাংলাদেশ
  • ভাষা বাংলা

আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

এই লেখকের আরও বই
এই বিষয়ে আরও বই
আলোচনা ও রেটিং
৫(১)
  • (১)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
আলোচনা/মন্তব্য লিখুন :

আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন

Edward Rony

২২ Feb, ২০২৩ - ৩:১৯ PM

'এটা আমার সময় নয়। আমি এ সময়ের বাসিন্দা নই। হে ঈশ্বর! তুমি তো সর্বসময়ের। আদিতে অন্তে সবসময়ই তুমি বিরাজমান। সময়ের ফাঁদ থেকে আমাকে রক্ষা কর ঈশ্বর!' এটা ছিল জেসাসের প্রতি এক সুদর্শন যুবক 'সায়মন' এর হৃদয় চেড়া হাহাকার মিশ্রিত প্রার্থনা। কিন্তু হায়! যে সময়ে দাঁড়িয়ে সায়মন জেসাসের প্রতি তার প্রার্থনা নিবেদন করছে সেই সময়ে তো জেসাসের আবির্ভাবই হয়নি পৃথিবীতে! এ কিভাবে সম্ভব? এ প্রশ্নের উত্তর 'কালভ্রমণ' বা কোন 'ইন্দ্রজাল'। অর্থ্যাৎ এক সময় থেকে অন্য সময়ে গমন। যাকে আমরা বলে থাকি Time travel. কিন্তু কি সেই কালভ্রমণের পন্থা? এজন্য আমাদের যেতে হবে গ্রীক পূরাণে। ভালবাসার দেবী 'আফ্রোদিতি' প্রেমে পরেন এক সাধারন মানব 'এডোনাইস' এর। এডোনাইস ও সাড়াদেয় আফ্রোদিতির প্রেমে। তারা মিলিত হতে থাকে গহিন অরণ্যে। কিন্তু মরণশীল মানব এডোনাইট ঢলে পরে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর কোলে। আর এই মৃত্যু শোকে উন্মাদপ্রায় আফ্রোদিতিকে তার পিতা 'জিউস' উপহার দেয় এক আশ্চার্য ব্রোঞ্জের দুয়ার। যার তালা খুলে আফ্রোদিতি প্রতি পূর্ণিমা রাত্রে অতীত ভ্রমণে যেতো, আর মিলিত হত এডোনাইস এর সাথে। কিন্তু আফ্রোদিতির স্বামীর অভিযোগে, আফ্রোদিতির মাতা 'হেরা' তাকে এই কালভ্রমণে যেতে নিষেধ করেন। কিন্তু সেটা অমান্য করে আফ্রোদিতি আবার কালভ্রমণে বের হলে হেরা অভিশাপ বর্ষণ করে। ফলে, আফ্রোদিতি আটতে যায় তার অতীতে। পিতার অনুগ্রহে আফ্রোদিতি পুনরায় স্বর্গে ফীরে আসলেও সেই ব্রোঞ্জের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায় চীরতরে। শোনা যায় দুয়ারটি গ্রিসের কোন প্যাগান মন্দিরের তলদেশে সুরক্ষিত রয়েছে। সায়মন, সেই ব্রোঞ্জের দুরায় দিয়েই কালভ্রমনে আঠার'শ বছর অতীতে চলে যায়! ফেঁসে যায় এক ইন্দ্রজালে! কিন্তু কীভাবে? একজন প্রত্নত্ত্ববিদ হিসেবে সায়মন জানতে পারে গ্রীসের এক মন্দিরের তলদেশে কিছু লুকানো আছে। তারই অনুসন্ধানে রোম থেকে গ্রীসে আসে সায়মন। মন্দির পুরোহিতরা তাকে অনুসন্ধানের অনুমতি না দিলে, গোপনে রাতের অন্ধকারে সে মন্দিরে তলদেশে প্রবেশ করে আর খুঁজে পায় সেই ব্রোঞ্জের দুয়ার। অজান্তে সেই দুয়ার দিয়েই সায়মন চলে যায় কালভ্রমণে! চলে যায় আঠার'শ বছর অতীতে! সময়কাল, জুলিয়াস সিজারের। আটকে যায় সে এক ইন্দ্রজালে! অন্যদিকে, অদ্ভুত কালচক্রে আটকে যাওয়া সায়মন মাঝে মাঝেই জেগে উঠে এক নারীর চীৎকারে। দুঃস্বপ্নে। কে এই নারী? কেনইবা সায়মনের কাছে বড়ই চেনা লাগে এই নারীর কণ্ঠস্বর! এদিকে, অতীতে এসে নিজ গুনে সিজারের রাজসভায় চিত্রকরের কাজ পেয়ে যায় সায়মন। আপাতত বেঁচে থাকার মত কিছুটা উপায় হলো সায়মনেন। তখনি পরিচয় হয় ইসাবেলার সাথে। উত্তাল রোম। বিশ্বাসঘাতকতা, ক্ষমতা দখল আর দ্বন্দ্বের রোষে জ্বলছে রোম। খুন হয়েছে জুলিয়াস সিজার। এর সবকিছুই তো সায়মনের জানা। কারন সে এসেছে ভবিষ্যৎ থেকে। ইসাবেলার হাত ধরে পালাতে শুরু করে সায়মন। কিন্তু এতসহজে? কালচক্র থেকে কি বের হতে পারবে তারা? নাকি জড়িয়ে পরবে আরেক কালচক্রে! নাকি সৃষ্টি করবে এক লুপ! যেখানে বারংবার সায়মন ফীরে আসবে অতীতে! বারংবার দেখা হবে ইসাবেলার সাথে! বারংবার অনিশ্চিত পথে ছুঁটে পালাবে তারা! মুক্তি পাবে কি এই ইন্দ্রজাল থেকে! পাঠ প্রতিক্রিয়া: প্রথমেই বলবো, অসম্ভব ভাল একটা বই। এক বসাতেই শেষ করেছিলাম। মিথ, ইতিহাস, ফিক্সন, রোমান্টিকের এর অনবদ্য সংমিশ্রণ 'ইন্দ্রজাল'। আমি রোমান্টিক ঘরানার লেখ একদম পড়ি না, তবুও বলবো এই ভঙ্গিতে যদি শুধু রোমান্টিক প্লটেই লেখা হত, তবুও পড়ে মুগ্ধ হতাম। জিমি আপুর লেখার প্যাটান টাই এমন। আরেকটা বিষয় নজর কেড়েছে, সেটা হলো প্রতিটি অধ্যায়ের বিভিন্ন পরিচ্ছেদ গুলোর ছোট ছোট বিন্যাস। এজন্যই বোধ করি এক বসাতে পড়ে শেষ করতে পেরেছি। imagery, diction, lucid language, Dramatic irony hyperbola 'র মত কাঠখোট্টা শব্দগুলোর প্রয়োগেও যদি উপন্যাস টা বিচার করি, আমার বিশ্বাস কোন অংশেই কম না লেখিকার লেখনি। অথবা বিন্দু পরিমান বাড়াবাড়িও করেন নি লেখিকা। তবে, nothing is perfect এর মত ছোটখাট কয়েকটি ছোটখাট বিষয়ে একটু আশাহত আমি। এটা আমার ব্যাক্তিগত পাঠ অনূভুতি। যেমন: প্রথমেই উপন্যাসের চরিত্র বিশ্লেষন করতে গেলে দেখা যাবে, সমগ্র উপন্যাসে কেবল 'সায়মন' ই। বলতে গেলে, দ্বিতীয় কোন প্রধান চরিত্র চোখে পরে না। এইদিক থেকে আরও কয়েকটি প্রধান চরিত্র আনা যেত পারতো। আর, যেহেতু ইতিহাসের প্রেক্ষাপট ছিল তাই সিজার বা অন্য কোন চরিত্রটাকে আরও স্পেস দেওয়া যেত পারতো। আরেকটি দুর্বল দিক হচ্ছে, ইতিহাস নির্ভর হলেও ঐতিহাসিক বিষয় বস্তু বা ঘটনার বর্ননা একটু কম থাকা। ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্ত মূলক আরেকটু ঘটনা যুক্ত করলে বইটা আরও বেশি রিচ হতো। যদিও লেখাটি ঐতিহাসিক না, তবুও প্লটে যেহেতু ইতিহাস এসেছে তাই এমনটা মনে হলো। ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ বরাবরই আছে আমার, এজন্য আরও বেশি আশা করেছিলাম। ঘটনার আকস্মিকতা বইটার অনেক বড় একটা দূর্বল পয়েন্ট, এটা বলতেই হবে। বর্তমান সময়ের অনেক লেখকের লেখায়, ঘটনা অযথা টেনে লম্বা করার প্রবণতা থাকলেও জিমি আপুর লেখায় ঘটেছে ঠিক উল্টো! কয়েকটি বিশেষ স্থানে ঘটনার আকস্মিকতা সত্যিই চোখে পরে। তবে, এগুলো আমার একান্তই ব্যাক্তিগত মতামত। সর্বোপরি একজন পাঠক হিসেবে বলতে পারি, সামান্য কিছু বিষয় (যেগুলো আমার ব্যাক্তিগত) ইগনোর করলে একটি ভাল বইয়ের সঙ্গায় যা কিছু বলা প্রয়োজন তার সবটাই আছে 'ইন্দ্রজাল' বইটাতে। বইটা পাঠের অনুভূতি অন্য আট-দশটি বই পাঠের থেকে ভিন্ন এবং নিঃসন্দেহে বলতে পারি অন্যতম একটা সেরা পঠিত বই 'ইন্দ্রজাল'। #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা