বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে

লেখক: ফাহাম আব্দুস সালাম

বিষয়: প্রবন্ধ, গবেষণা ও অন্যান্য

৩২০.০০ টাকা ২০% ছাড় ৪০০.০০ টাকা

ফাহাম আব্দুস সালামের লেখার সাথে পরিচিত সবাই জানেন যে ফাহাম ভালো লিখতে পারেন। তবে ফাহামের তিনটি গুণ আলাদা করে বলা যায়, যা লিখতে পারেন এরকম বহু লোকের মাঝে আমরা খুঁজি কিন্তু পাই না। ফাহাম চিন্তা করতে জানেন। চিন্তার ব্যাপারটা বুঝতে হলে আমরা কেনেডিয়ান সাইকোলজিস্ট জর্ডান পিটারসনের কথা ধার করতে পারি। তিনি বলছেন যে, মানুষ সাধারণত তাদের মাথায় যে চিন্তাটা আসে সেটা নিয়ে চিন্তা করে না। অর্থাৎ যেকোনো ইস্যুতে একটি সাধারণ ভাবনা তাদের আসে ঠিকই – কিন্তু সেই প্রাথমিক ধারণাটা কতটা উপযুক্ত হয়েছে, তা নিয়ে তারা আর চিন্তা করতে পারে না। ফাহাম এই কাজটা পারেন। তিনি পদ্ধতিগতভাবে চিন্তা করতে পারেন বলে নিজের ভাবনাকে ছকে নিতে পারেন। যদি ফাহামের কোনও চিন্তায় ভুল থাকে তাহলে সেটাও তিনি পদ্ধতিগতভাবেই করেছেন। তাই কোথায় ভুল হয়েছে, সেটা ধরিয়ে দিতে পারলে তিনি বুঝবেন, সবাই বোঝে না। 

পছন্দের তালিকায় রাখুন

বইয়ের বিবরণ

  • শিরোনাম বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে
  • লেখক ফাহাম আব্দুস সালাম
  • প্রকাশক আদর্শ
  • আইএসবিএন 9789843489999
  • মুদ্রণ 1st Published, 2020
  • বাঁধাই Hardcover
  • পৃষ্ঠা সংখ্যা 152
  • দেশ বাংলাদেশ
  • ভাষা বাংলা

আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

এই লেখকের আরও বই
এই বিষয়ে আরও বই
আলোচনা ও রেটিং
৫(১)
  • (১)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
  • (০)
আলোচনা/মন্তব্য লিখুন :

আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন

Habibur Rahman Munna

০৮ Feb, ২০২৩ - ১২:৩০ AM

বইয়ের নামঃ বাঙ্গালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে লেখকঃ ফাহাম আব্দুস সালাম প্রচ্ছদ মূল্যঃ ৪০০/- প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (তৃতীয় মুদ্রণ) প্রকাশকঃ আদর্শ প্রকাশনী “বাঙ্গালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে” একটি চিন্তাশীল বই। কৈশোরে বাংলা বইয়ে পড়া নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বিষয়ক প্রবন্ধের মতো; যখন নিজেকে প্রশ্নোত্তরে খুঁজতাম, কখনও পেতাম, কখনও প্রশ্নের কুয়োর হারিয়ে যেতাম ঠিক সেই জনরার বই “বাঙ্গালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে”। তবে বইটি স্রোতের বিপরীতে চলা সমাজ সংস্কার বিষয়ক অতি চাক্ষুস স্বাক্ষর। যেখানে লেখক পিতা সেজে কন্যাকে খোলা চিঠি লিখে বইয়ের ইতি টেনেছেন। তিনি আসলে প্রত্যেক নরম, সহজ-সরল, পবিত্র বোধের কিশোর-কিশোরীর উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলেছেন। যেখানে কিছুক্ষণের জন্য পাঠক হিসেবে আমি নিজেকেও খুঁজে পেয়েছিলাম, খুঁজে পাওয়াটাই স্বাভাবিক। চোদ্দটি প্রবন্ধে সজ্জিত প্রথম প্রবন্ধটি শুরু হয়েছে বাঙালির বিপ্লব দিয়ে- “বাঙালি বারে বারে প্রথম থেকে শুরু করতে চায়”। স্বভাবতই যে কারো প্রশ্ন জাগ্রত হওয়া সচেতনতার মধ্যে পড়ে, বাঙালি আসলে কি শুরু করতে চায়, কেন শুরু করতে চায়, কিভাবে শুরু করতে চায়? এই জানতে চাইবার বিপুল আগ্রহ থেকেই গড়ে উঠে বিপ্লবী চেতনা আর পদক্ষেপ। লেখক মনে করেন- “এদেশে বিপ্লবের কোন সম্ভাবনা অদূর কিংবা সুদূর ভবিষ্যতেও নেই। অথচ প্রতিটি জাতিরই কখনও না কখনও প্রয়োজন হয় বিবর্তনকে তরান্বিত করার। আমরা দীর্ঘদিন সেই প্রয়োজনীয়তার ভেতরেই দিনাতিপাত করছি। ... সুবিধাপ্রাপ্তরা কখনও পরিবর্তন চায় না- স্বভাবতই”। আর সুবিধাহীনেরা দেখতে চায় ধ্বংস। কিন্তু শুধু ধ্বংসই যে বিপ্লব এনে দিতে পারে না তা আমাদের সুবিধাহীন বাঙালিরা বোঝে না। লেখক এই বিষয়ে বলেছেন- “ধ্বংসের আয়োজনে প্রয়োজন কেবল রাগ কিন্তু সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন প্রতিভা”। বিপ্লবকে টানতে গিয়ে তিনি পরাধীন ও স্বাধীন বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পার্থক্য তুলে ধরে যুক্তি দিয়েছেন। প্রশ্ন করেছেন পাঠককে, নিজেকে, আপনাকে, আমাকে- বিপ্লব দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, আবার কোনো বিপ্লব দিয়ে কি বাংলাদেশের এই অর্ধ-মত্ত সমাজকে পরিবর্তন করা সম্ভব? বিপ্লবের অভীপ্সায় বাঙালি শুধু তর্কেই মেতে থাকে। এ যেন ঠিক স্বাধীনতার একান্ন বছর পরে “বিপ্লবী বাঙালি” থেকে “তর্ক বাঙালিতে” বিবর্তিত হয়েছে। বইটির দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম প্রবন্ধ পর্যন্ত বাংলা ভাষা সম্পর্কে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রথমে তিনি শুরু করেছেন ভাষা আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে- ’৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানের একটা আধিপত্যবাদী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, উর্দু ভাষার বিরুদ্ধে না”। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন মিডল ক্লাসের এর প্রতি স্বার্থের কথা। একই সাথে বলেছেন, “ভাষা আন্দোলনে বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠত্বের কোনো যোগাযোগ নেই”। কিন্তু স্বার্থের মাঝেও ভালোবাসা থাকতে পারে। কোন জিনিসের প্রেমে পড়ার জন্য শ্রেষ্ঠত্বের প্রয়োজন হয় না। আবেগে কখনও যুক্তি খাটে কখনও যুক্তির শক্তি হারিয়ে যায়। এখানে যুক্তি হেরে যায় কারণ, আবেগ ছাড়া মানুষ নিজের কাছেই সাপের খোলসের মতো পরিত্যক্ত। আবেগ কিছুটা বিশ্বাসেরও পরিচায়ক। শেষ প্রবন্ধে লেখক নিজেই যুক্তি এবং বিশ্বাসকে সমান্তরালে রাখতে বলেছেন- কোন পথে আমি আমার বিশ্বাসকে নিয়ে যাব সেটাই আমার মনুষ্যত্বের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় যুক্তির সঞ্চারণের স্পর্ধা দেখাতে নিষেধও করেছেন। কিন্তু লেখকের সাথে খানিকটা দ্বিমত পোষণ করে বলছি- বাংলা ভাষা অসম্পূর্ণ হতে পারে, অসংখ্য ভাবের অভাবে ক্লিষ্ট হতে পারে কিন্তু সাধারণ বাংলার প্রতি অধিকাংশ মানুষের আবেগ ছিল, মায়া ছিল এবং নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীর শুধু স্বার্থ থাকতে পারে! তবে এটা সত্য, প্রমিত বাংলার দ্বাররক্ষকরা একে বিবর্তনের সুযোগ দিচ্ছেনা বলে কালের স্রোতে এর দীনতা বেড়েই যাচ্ছে। অন্যান্য প্রবন্ধে লেখক বেশ দক্ষতার সাথে মানুষের বৈশিষ্ট্যের এপিঠ-ওপিঠ উল্টে পাল্টে দেখার চেষ্টা করেছেন। ধনী-গরীব, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, মৌলবাদী সকল শ্রেণীর মানুষের সমাজচিন্তা, মনস্তত্ত্ব, জীবনধারা ও ফ্যান্টাসির মাত্রাও সামুরাই যোদ্ধার তীক্ষ্ণ তলোয়ারের মতো বর্ণনা করেছেন। আর লেখকের এই চিন্তা শক্তি বইটির বহুমাত্রিকতা বাড়িয়েছে; নিঃসন্দেহে যা পরবর্তীতে অনেক চিন্তাবীদের অনুবন্ধে সূত্রতা ঘটাবে। লেখাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান মুন্না #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা