১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লব যে মার্ক্সীয় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল, পরবর্তী তিন দশকে যা মানবপ্রজাতির এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে বিস্তার লাভ করেছিল, তা নাটকীয় দ্রুততায় গত শতাব্দীর শেষ চতুর্থাংশে কেন বিলুপ্ত হয়ে গেল? এই পতনের পর মানবসমাজের ভবিতব্য কি পুঁজিবাদ? কোন চরিত্রের পুঁজিবাদ?
সমতা, প্রবৃদ্ধি ও ব্যক্তির সর্বাঙ্গীণ বিকাশের লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলো পুঁজিবাদ এবং বাস্তবে বিদ্যমান সমাজতন্ত্রের বিকল্প কোনো সমাজ সংগঠনের চিন্তা করতে পারে কি?
বর্তমান গ্রন্থটিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সুপরিচিত অর্থনীতিবিদ এই প্রশ্নসমূহের উত্তর অন্বেষণ করেছেন।
বইয়ের বিবরণ
১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লব রাশিয়ায়
যে মার্ক্সীয় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা করে, তা গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে পুঁজিবাদী মহামন্দার প্রতিতুলনায় ছিল বিশ্বের বিস্ময়। চল্লিশের দশকে নাৎসি সমরশক্তির সঙ্গে মহাযুদ্ধে বিজয়ী শক্তিসমূহের অগ্রণী। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে মানবপ্রজাতির এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে প্রসারিত এবং অক্ষুণ² প্রবৃদ্ধির ধারক এই ব্যবস্থা তৃতীয় বিশ্বের বহু মানুষের দৃষ্টিতে মনে হয়েছিল মানবসমাজের ভবিষ্যৎ। অথচ সত্তরের দশক থেকে ব্যবস্থাটির প্রবৃদ্ধি শ্লথ হতে থাকে এবং অত্যল্প কালের মধ্যে, গত শতাব্দীর শেষ দশকের প্রারম্ভে, বিশ্বব্যাপী ব্যবস্থাটি
বিলুপ্ত হয়।
ব্যবস্থাটির পতন হলেও এর ঐতিহাসিক উদ্ভব এবং নাটকীয় পরাভব সম্বন্ধে প্রশ্নের নিরসন হয়নি। লেনিন ও তাঁর অনুসারীরা যে ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন, তার সঙ্গে মার্ক্সের তত্ত্ব ও মতাদর্শের কতটা সামঞ্জস্য ছিল? বাস্তবে বিদ্যমান সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাটি বাইরের আক্রমণে নয়, অন্তঃস্থিত অসংগতির কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। এই অসংগতির চরিত্র ও ব্যাখ্যা কী? মার্ক্সীয় সমাজতন্ত্র গঠনের কোনো বিকল্প নকশার অস্তিত্ব ছিল কি? যাঁরা সমতা, প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে সমাজতন্ত্রের অনুসারী হয়েছিলেন, তাঁদের সামনে বিকল্প কী? পুঁজিবাদকে অবশ্যম্ভাবী বলে গ্রহণ করা? নাকি সমতার লক্ষ্যে বিকল্প সমাজতন্ত্রের সন্ধান?
গ্রন্থটিতে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর অনুসন্ধান করা হয়েছে।
- শিরোনাম আমার সমাজতন্ত্র
- লেখক আজিজুর রহমান খান
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।