ইতিহাসের অনেক দিক আছে, যা আপাতদৃষ্টিতে এমনই তুচ্ছ যে পেশাগত ও একাডেমিক ঐতিহাসিকদের রচনায় এ পর্যন্ত কমই ধরা পড়ে। বর্তমান গ্রন্েথ লেখক মাহবুব আলম বাংলার ইতিহাসের বিভিন্ন যুগের অনেক ঘটনা এমন মনোরমভাবে বর্ণনা করেছেন, যা একাধারে তথ্যপূর্ণ ও উপভোগ্য। খণ্ডিত সত্যের কাঠামোয় ভর করে মধ্যযুগ থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতিতে ওঠানামা ও ভাঙাগড়ার যে নানা চিহ্ন চোখে পড়ে, সেসবই প্রবন্ধ আকারে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এ বইয়ে। এর কিছু অংশ আমাদের চেনা, কিছু অস্পষ্ট। আবার অনেকের কাছে হয়তো একেবারেই অচেনা।
বইয়ের বিবরণ
ইতিহাসের চমকপ্রদ কিছু কাহিনি গল্পের মতো করে বলা হয়েছে এ বইয়ে। বাংলার গুপ্তধনের নানা সত্য ঘটনা তুলে লেখক প্রমাণ করেছেন, গুপ্তধন নিয়ে গল্পের সবটাই অলীক নয়। মধ্যযুগে বাংলার স্বাধীন সুলতান গিয়াসুদ্দিন আজম শাহর চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থাপনের রোমাঞ্চকর কাহিনি, মোগল বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলার বীর বারোভুঁইয়াদের মরণপণ লড়াই ও তাঁদের হস্তীবাহিনীর বিস্ময়কর সাহস আর রণকৌশলের গল্পও তুলে ধরেছেন। আছে বাঙালির বহির্বাণিজ্যের সাফল্য ও পরবর্তীকালে তাদের সমুদ্রের দখল হাতছাড়া হওয়া এবং বাংলার ভুবনজোড়া সুতিবস্ত্রের বাণিজ্যের সর্বনাশের বিষাদকাহিনিও। ইংরেজি শেখার জন্য বাঙালির প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা আর এই নতুন ভাষা আয়ত্ত করে বাঙালির বিস্ময়কর সাংস্কৃতিক ও জাগতিক উন্নতির কাহিনি বর্ণনা করেছেন লেখক সরস ভাষায়। মধ্যযুগ থেকে উনিশ শতক পর্যন্ত বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতিতে ওঠানামার, ভাঙাগড়ার নানা গল্প আছে এ বইয়ে। এর কিছু আমাদের চেনা, কিছু অস্পষ্ট—অনেকের কাছে হয়তো বা একেবারে অচেনা। সহজ ভাষায়, ইতিহাসের মান্যসূত্র ও সর্বজনগ্রাহ্য উপাদান ঘেঁটেই এসব কাহিনি বলা হয়েছে।
- শিরোনাম গুপ্তধনের খোঁজে (ইতিহাসের বিচিত্র সরস কাহিনি)
- লেখক মাহবুব আলম
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন ৯৭৮৯৮৪৯০০৩৯৯১
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
মাহবুব আলম
জন্ম ১৯৪৪, নেত্রকোনায়। শৈশব কেটেছে বাবার চাকরিসূত্রে সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানের নানা জেলা শহরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে ইতিহাসে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৬৬-তে স্নাতকোত্তর। কিছুদিন অধ্যাপনার পর ১৯৬৮ সালে কূটনৈতিক ক্যাডারে যোগ দেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দূতাবাসের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশন কলকাতা, ভারতে মিশন-প্রধান ছিলেন। এরপর মালয়েশিয়া, তুরস্ক ও সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম বই শায়েস্তা খানের শেষ ইচ্ছা ও অন্যান্য (২০১২)। ইতিহাসের অপ্রচলিত অলিগলিতে তাঁর বরাবরই প্রবল আগ্রহ। কলের গানের পুরোনো বাংলা রেকর্ড সংগ্রহ, গ্রন্থপাঠ এবং অন্তরঙ্গ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে পছন্দ করেন।