যে তরুণ বা তরুণী অল্প বয়সে এই উপন্যাস পড়ে লজ্জা অনুভব করতেন, তিনিই এখন পরিণত বয়সে এর ভেতরে খঁুজে পান মানবজীবনের গভীর দার্শনিকতা, অস্তিত্বের রহস্যময়তা ও কালস্রোতে কুটোর মতো ভেসে যাওয়া বেদনাহত জীবন। ‘খেলারাম’ বাংলা সাহিত্যের একটি সময় অতিক্রমী বা টাইম অ্যাডভান্সড্ উপন্যাস। কারণ, মানব-মানবীর প্রেমে দেহ যে একটি বিরাট ভূমিকা পালন করে, বিদেশের সাহিত্যে তা হরদম লেখা হলেও আমাদের দেশের অনেক সাহিত্যিক এটিকে সযত্নে এড়িয়ে চলেন। এতে করে খেলারামের কোনো অঙ্গহানি হয়নি। খেলারাম খেলে যাচ্ছে তার নিজের মতোই।
বইয়ের বিবরণ
সৈয়দ শামসুল হকের খেলারাম খেলে যা একটি অবিস্মরণীয় উপন্যাস। যৌনতা আর শরীরী সম্পর্কের বিস্তৃত বিবরণের জন্য প্রকাশের পরপরই এ উপন্যাস নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অশ্লীলতার অভিযোগে লেখককে প্রচুর নিন্দামন্দ শুনতে হয় এ জন্য। কিন্তু সাহিত্যের সব ধরনের পাঠক সাগ্রহ পাঠ করেছেন এই বই। বাবর আলী ব্যবসায়ী। টেলিভিশন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক। চল্লিশের কোঠায় বয়স, অবিবাহিত। চেনা মুখ, স্মার্ট। কথা বলে মন জয় করতে পারঙ্গম। তরুণী যুবতীদের মধ্যেই তাঁর ভক্ত বেশি। এদের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক তৈরি হতে সময় লাগে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জাহেদা। তাকে নিয়ে বাবর আলী উত্তরবঙ্গ সফরে যায়। তার মাথায় তখন সম্ভোগ ছাড়া কিছু নেই। হয়ও তা-ই। ফেরার পথে ঢাকার কাছে তারা আক্রান্ত হয়। একদল দুবৃর্ত্ত জাহেদাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তার তীব্র আর্তনাদ বাবর আলীর ভেতরে নিজের হারিয়ে যাওয়া বোন হাসনুকে জাগিয়ে তোলে। হাসনুকে সে আর হারাতে চায় না। তখন যে মেয়েটাকে রক্ষার জন্য ছুটছে বাবর আলী, সে জাহেদা না হাসনু সেটা আর মীমাংসা করা যায় না। এর মধ্য দিয়ে একটি রগরগে কাহিনি একটি উচ্চতর সাহিত্যকর্মের মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়ে ওঠে।
- শিরোনাম খেলারাম খেলে যা
- লেখক সৈয়দ শামসুল হক
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
- আইএসবিএন 9789849326069
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

সৈয়দ শামসুল হক
জন্ম ২৭ ডিসেম্বর ১৯৩৫, কুড়িগ্রাম। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, কাব্যনাট্য ও প্রবন্ধ মিলে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ প্রায় দুই শ। আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, জেবুন্নেসা-মাহবুবউল্লাহ্ স্বর্ণপদক, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, রাষ্ট্রীয় একুশে পদক, স্বাধীনতা পদকসহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন। মৃত্যু ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬।