বইয়ের বিবরণ
তিরিশটি প্রবন্ধের সংকলন এই বই। বিষয়ের বৈচিত্র্যে, তথ্যের বিপুলতায়, নানা স্বাদে তা যেমন উপভোগ্য তেমনি নতুন চিন্তার প্রেরণাদায়ী। তিনটি প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রবন্ধগুলির উপজীব্য। বাঙালি সংস্কৃতি ও বাঙালির ইহজাগতিকতার স্বরূপ-সন্ধান তার মধ্যে একটি। অন্য দুটি আনিসুজ্জামানের অভিজ্ঞতায় গড়ে-ওঠা বিষয়ের নিপুণ ও নির্ভুল পর্যবেক্ষণ। তিনি লক্ষ করেছেন, ভাষা-আন্দোলনের মতো বিরাট ও মহৎ অর্জন সত্ত্বেও আজ বাঙালির ভাষাজ্ঞান ও ভাষা-পরিস্থিতি এক করুণ পরিণতির দিকে এগিয়েছে। বাঙালি জাতিসত্তা, তার আত্মপরিচয়, তার মননধারার ব্যাখ্যা এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষতিরে বাস্তবানুগ বিশ্লেষণ তাঁর এই ভাবনাকে সজীব করে তুলেছে। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের অর্জন বাঙালির এক অসমসাহসী সংগ্রাম এবং এক অমোচনীয় দুঃখের ফল। সেই স্মৃতি বহন করবার সামর্থ্যরে ওপরই বাঙালির জাতীয়তাবাদ, ঐক্যচেতনা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব মজবুত ভিত্তি পেতে পারে-এই হচ্ছে তাঁর তৃতীয় মত।
সংকলিত রচনাগুলিতে ইতিহাস ও ঐতিহ্যগত আরো কিছু তাৎপর্যবহ কথা নিত্যস্মরণযোগ্য ব্যক্তিবর্গের আলোচনায় উঠে এসেছে যা বাঙালি জাতিসত্তার সঙ্গে অঙ্গীভূত। ভাষাপ্রয়োগে অসামান্য সংযম, তত্ত্ববিচারে অপপাত, অভিজ্ঞতা আর নানা জ্ঞানের আলোয় প্রবন্ধগুলি সমকালের এক পরিশীলিত মনীষার অনন্য ভাষ্য।
- শিরোনাম শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ : আনিসুজ্জামান
- লেখক আনিসুজ্জামান
- প্রকাশক কথাপ্রকাশ
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।

আনিসুজ্জামান
জন্ম ১৯৩৭ সালে, কলকাতায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় বি এ অনার্স, এম এ এবং পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। গবেষণা করেছেন শিকাগো ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে, যুক্ত ছিলেন জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা-প্রকল্পে। শিক্ষকতা করেছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্যারিস, নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং ফেলো ছিলেন, বিশ্বভারতীতে ভিজিটিং প্রফেসর। সাহিত্য ও সমাজ সম্পর্কে ইংরেজি ও বাংলায় লিখিত ও সম্পাদিত তাঁর গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে ঢাকা, কলকাতা, লন্ডন ও টোকিও থেকে। বাংলা একাডেমী পুরস্কার ও রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক পেয়েছেন; পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরোজিনী বসু পদক, এশিয়াটিক সোসাইটির পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মারক ফলক ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মশতবার্ষিক স্মারক ফলক এবং রবীন্দ্রভারতীর সাম্মানিক ডি লিট্। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন। মৃত্যু ১৪ মে ২০২০।