বইয়ের বিবরণ
- শিরোনাম পথের পাঁচালী
- লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
- প্রকাশক বাতিঘর
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
আলোচনা/মন্তব্যের জন্য লগ ইন করুন
User
২১ Feb, ২০২৩ - ২:০৯ PM
বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কিছু উপন্যাসের মধ্যে "পথের পাঁচালী " একটি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা এই কালজয়ী উপন্যাস সর্বস্তরের পাঠকের হৃদয় জয় করে নিয়েছে। দারিদ্র্যের মধ্যে গ্রামীণ জীবনে বেড়ে ওঠা প্রকৃতিঘনিষ্ঠ দুই ভাই-বোনের জীবনের আখ্যান নিয়ে উপন্যাসটি রচিত হয়েছে। বাবা হরিহর, মা সর্বজয়া, পিসি ইন্দিরা ঠাকুরুন এবং দুই ভাই-বোন দূর্গা ও অপু-কে কেন্দ্র করেই এই উপন্যাসটি রচিত। হতদরিদ্র পরিবারের দুই শিশুর কাহিনী উপন্যাসটিকে করে তুলেছে জনপ্রিয়।দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও তাদের শৈশবে সেই কষ্ট প্রধান হয়ে উঠেনি। দুই ভাই-বোনের খুনসুটি,গ্রামের ফলফলাদি খাওয়ার আনন্দ আর বিচিত্র বিষয় নিয়ে তাদের বিষ্ময় আর কৌতূহল উপন্যাসটিকে করে তুলেছে জনপ্রিয়। একসঙ্গে বাড়ির পাশের জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো,বৃষ্টিতে ভেজা,জঙ্গলে চড়ুইভাতি খাওয়া,কাশবন আর দূরের রেললাইন দেখতে যাওয়া ইত্যাদি মজার আর কৌতূহলী কাহিনীর বর্ণনা এই উপন্যাসটিতে পাওয়া যাবে।বাবা হরিহর রায় বাড়িতে থাকেন না বললেই চলে। তিনি কাজের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেন। উপন্যাসটিতে মা সর্বজয়া-কে পল্লি মায়ের শাশ্বত রূপে দেখা যায়। পিসি ইন্দিরা ঠাকুরুন এর অল্প প্রভাব উপন্যাসটিকে করে তুলেছে আরও জনপ্রিয়। দূর্গা দূরন্ত আর চঞ্চল মেয়ে। সে সবসময় বনে-বাদাড়ে আর পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়।গাছের ফলফলাদি কুড়িয়ে এনে খাওয়া তার অভ্যাস।অপু একটু লাজুক প্রকৃতির। সে বই পড়তে ভালোবাসে।বিচিত্র সব মজার গল্প তার মাথায়। উপন্যাসটিতে মূলত অপু ও দূর্গা'র প্রাধান্য ছিল বেশি। মায়ের বকুনির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাড়ির বাইরে বসে দুই ভাই বোনের আমের কুশি জারানো,অপু'র তার বাবার সাথে গড়ের মাঠ দেখতে যাওয়া,লুকিয়ে যাত্রাপালায় যাওয়া ইত্যাদি কাহিনী গল্পটিকে করে তুলেছে আরও কৌতূহলী। আপনারা যখন পড়বেন হয়তো আপনারাও আমার মতো অপু-দূর্গাদের গ্রাম নিশ্চিন্দিপুরে চলে যাবেন।উপন্যাসটির শেষ পর্যায়ে এসে আমার খুব খারাপ লেগেছে। হঠাৎ দূর্গা জ্বরে আক্রান্ত হয়। আর সেই জ্বরেই দূর্গার মৃত্যু হয়। এখানে দূর্গার মৃত্যুতে অপু বেশি কষ্ট পায়।এখানে অনেকেই আমার মতো দুঃখ অনুভব করবেন।দূর্গার মৃত্যুর পর হরিহর রায় তার ভিটা ছেড়ে সপরিবারে কাশী চলে যান। আর কাশী যাওয়ার পর সেখানে তারা এক নতুন বাসায় উঠে। আর কিছু কাহিনী পর উপন্যাসটি এখানেই শেষ হয়ে যায়। উপন্যাসটি পড়ার সময় গ্রামের সহজ সরল জীবন আপনার সামনে ভেসে উঠবে। উপন্যাসটি পড়ে দেখলে হয়তো আপনিও অপু কিংবা দূর্গা হয়ে নিশ্চিন্দিপুরে চলে যাবেন। আশা করি বইটি সবাই পড়বেন। #প্রথমাডটকম_কথাপ্রকাশ_বই_রিভিউ_প্রতিযোগিতা