আনিসুজ্জামান বলেছিলেন, ‘যে সমাজ থেকে সাহিত্য তৈরি হচ্ছে, সেই একই সমাজে তো ধর্মান্দোলন হচ্ছে, অর্থনৈতিক জীবনও চালিত হচ্ছে। এগুলো অবিচ্ছেদ্যভাবে দেখার ঝোঁক আমার মধ্যে সব সময়ে কাজ করেছে।’ এ কারণে তাঁর বিষয় ছড়িয়ে পড়ে সাহিত্য থেকে সমাজ-সংস্কৃতির জগতে। সময়ের উৎকণ্ঠাকাতর প্রশ্নগুলোর জবাব তিনি নিজের মতো করে খুঁজেছেন। এ বই তাঁর ভাবনার সারসংকলন।
বইয়ের বিবরণ
বাংলা পড়তে গিয়ে আনিসুজ্জামানের মনে হয়েছিল, সাহিত্যকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়। তাঁর চোখ চলে যায় ইতিহাসের বৃহত্তর পটে। গবেষণার বিষয় ছাপিয়ে যায় নির্ধারিত সীমানা। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, যে সমাজ থেকে সাহিত্য রচিত হচ্ছে, রাজনৈতিক আন্দোলন বা অর্থনীতির সঞ্চালনের উৎসও সেটিই। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার পর পর্যন্ত দেশের চলমান ইতিহাসে তিনি ছিলেন রাজপথে। আনিসুজ্জামানের গবেষক ও কর্মিসত্তা এভাবে মিশে যায়। ছড়িয়ে পড়ে তাঁর লেখার বিষয়। এ বই ইতিহাস, সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্য নিয়ে তাঁর বৈচিত্র্যপূর্ণ ভাবনার এক সারসংকলন।
- শিরোনাম মহামানবের সাগরতীরে
- লেখক আনিসুজ্জামান
- প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
আনিসুজ্জামান
জন্ম ১৯৩৭ সালে, কলকাতায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় বি এ অনার্স, এম এ এবং পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। গবেষণা করেছেন শিকাগো ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে, যুক্ত ছিলেন জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা-প্রকল্পে। শিক্ষকতা করেছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্যারিস, নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং ফেলো ছিলেন, বিশ্বভারতীতে ভিজিটিং প্রফেসর। সাহিত্য ও সমাজ সম্পর্কে ইংরেজি ও বাংলায় লিখিত ও সম্পাদিত তাঁর গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে ঢাকা, কলকাতা, লন্ডন ও টোকিও থেকে। বাংলা একাডেমী পুরস্কার ও রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক পেয়েছেন; পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরোজিনী বসু পদক, এশিয়াটিক সোসাইটির পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মারক ফলক ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মশতবার্ষিক স্মারক ফলক এবং রবীন্দ্রভারতীর সাম্মানিক ডি লিট্। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন। মৃত্যু ১৪ মে ২০২০।